Site icon Jamuna Television

নওগাঁয় মিলছে নতুন জাতের তরমুজ ‘গোল্ডেন ক্রাউন’

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:

হলুদ রঙের তরমুজ। কেউ বলছেন ‘রক মেলন’; কেউ বলছেন গোল্ডেন ক্রাউন। তবে নাম যাই হোকে, জৈষ্ঠের খরতাপে রসালো স্বাদ মিটাতে এই ফলের জুড়ি নেই। রসে ভরা নতুন জাতের এই তরমুজ চাষ হচ্ছে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হোসেনপুর গ্রামে।

হোসেনপুর গ্রামের চাষি আব্দুল খালেক নিজ উদ্যোগে এই তরমুজের চাষ করেছেন। ফলনও এসেছে বেশ।

আব্দুল খালেক জানান, ২০১৯ সালে দিনাজপুর জেলার স্থানীয় এক কৃষকের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর নিজের ১০ কাঠা জমিতে শুরু করেন চাষ। সে বছর প্রায় ২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছিলেন। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা দরে।

খালেক বলেন, স্বল্প মেয়াদি এই ফল সারা বছর উৎপাদন হয়। তাই বছরে কয়েকবার চাষ করা যায়। পরিপক্ক ফলের বাইরের রঙ হলুদ হলেও ভেতরে লাল। খেতে অন্যান্য জাতের তরমুজের মতই রসালো, সুস্বাদু ও মিষ্টি।

বীজ বোপনের মাত্র ৪০ থেকে ৫০ দিনেই গাছে ফল ধরে। পরিপক্ক হতে সময় লাগে ২০ দিন। ওজন হয় তিন থেকে সাড়ে চার কেজি পর্যন্ত। বীজ বপনের দিন থেকে ৮০ দিনের মধ্যেই ফল বিক্রি শুরু করা যায়। মাচায় চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে খালেক নতুন জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। হলুদ তরমুজের পাশাপাশি খালেক এবার আরো ১০ কাঠা জমিতে একই জাতের কালো রঙের তরমুজ চাষ করেছেন। সেগুলোতে ফুল ও ফলন আসতে শুরু করেছে।

তবে, এবার কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় চলমান লকডাউনে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি। তবে পরিস্থিতি অল্পদিনেই স্বাভাবিক হয়ে আসলে এবারও তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কৃষি বিভাগ বলছে, রকমেলন বা গোল্ডেন ক্রাউন সম্ভবত সবচেয়ে বেশি চাষ হয় আফ্রিকায়। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের দিনাজপুর, নওগাঁ, রাজশাহীসহ বেশ কিছু জেলায় সীমিত আকারে চাষ শুরু হয়েছে। বাজারে অন্য তরমুজের চেয়ে চাহিদা বেশী থাকায় চাষিরা এই ফল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।

মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র রায় জানান, খালেকের সাফল্য দেখে স্থানীয় অনেক কৃষকই গোল্ডেন ক্রাউন চাষে উব্ধু্দ্ধ হচ্ছেন। আগামীতে এই ফলের চাষ ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ শুরু করেছে।

Exit mobile version