Site icon Jamuna Television

ঘূর্ণিঝড় আম্পান: ফেনীতে ফাঁকা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো

ফেনী প্রতিনিধি:

‘আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে করোনার ভয়, সেজন্য আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি। মরলে বাড়িতে মরে যাবো। আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে সেখানে শুধু ছবি তুলে, সরকারকে দেখায়, সরকার থেকে বস্তায় বস্তায় চাল, ডাল, টাকা আনে আমরা কিচ্ছু পাই না। সেজন্য এবছর যায়নি। এর আগেও বহুবার গিয়েছি, কিছু পায়নি’ ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা তাজুল ইসলাম আক্ষেপ করে এসব কথা বলেন।

সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধেয়ে আসা ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার তাড়া নেই। প্রতিদিনের মতো চায়ের দোকান, গরু মহিষ পালন স্বাভাবিক কাজে ব্যস্ত রয়েছে তারা। শুধুমাত্র এ ইউনিয়নের জেলে পাড়ার অবস্থাটা কিছুটা ভিন্ন। জেলেরা মাছ শিকার করতে নদীতে নামেনি। পাড়ার চায়ের দোকানে বসে অলস সময় পারছে। কিরণ জলদাস জানান, আজ আমরা নদীতে নামিনি। নদীতে ৯ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত চলছে সেজন্য। ‘আশ্রয় কেন্দ্রে কেন যাননি’ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনো যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

এদিকে উপজেলা প্রশাসন দাবি করেছে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। বাস্তবে গিয়ে দেখা গেছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মানুষ শূন্য। চরচান্দিয়া ইউনিয়নের আজিজুল হক মায়মুনা উচ্চ বিদ্যালয় ও জেলে পাড়ার আশ্রয় কেন্দ্রে দেখা গেছে সুনসান নীরবতা । স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে বুধবার বিকেল ৩ টা উপজেলার সবক’টি আশ্রয়কেন্দ্র মানুষশূন্য।

স্থানীয়রা জানান, চরচান্দিয়া ইউনিয়নে গতকাল রাতে ১৫-২০ জনকে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসলেও চিড়া, মুড়ি, গুড় ছাড়া রান্না করা খাদ্য না দেয়ায় সাহরীর সময় বাড়িতে চলে গেছে। ৪৩ টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৬৮ টি কেন্দের সবগুলোই ফাঁকা। আশ্রয় কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বহু অনিয়মকে দুষছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের এমন অভিযোগ সঠিক নয়, মূলত তারা ঘর বাড়ি ছেড়ে আসতে চাচ্ছে না অজুহাত দেখাচ্ছে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব । জেলা প্রশাসন ৫০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৫ টি মেডিকেল টিম । মাঠে কাজ করছে পনেরোশত স্বেচ্ছাসেবক।

Exit mobile version