Site icon Jamuna Television

আমের ওপর আম্পানের থাবা

আমের ওপর আম্পানের থাবা

রাজশাহীতে এভাবেই ঝরে পড়েছে আম।

একে বলা হয় ফলের রাজা। সামনেই আমের রসের রাজকীয় মৌসুম ছিল। সেটি যেন অনেকটায় ফিকে করে দিলো ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। সুপার সাইক্লোনের খ্যাতি পাওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরার অসংখ্য আমগাছ উপড়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে প্রচুর পরিমাণ আম।

আমাদের রাজশাহীর প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আম বাগানগুলো ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলিমুদ্দিন জানিয়েছে, প্রায় ২৫ শতাংশের মতো আম ঝরে পড়ে থাকতে পারে। তবে এসব আম প্রক্রিয়াজাত করে আচার কিংবা জেলির মতো খাবার তৈরি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে।

রাজশাহী কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ২ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঝড়ের পর এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

আম্পানের প্রভাব পড়েছে আমের জন্য বিখ্যাত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জেও। সেখানকার কয়েকজন আমচাষী বলেন, এমনিতেই চলতি মৌসুমে আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় ছিলাম আমরা। যা আম এসেছে তাতে খরচ উঠা কষ্ঠসাধ্য হয়ে পড়বে। তারওপর আম্পানের কারণে ক্ষতির শঙ্কা আরও বেড়ে গেলো।

একই শঙ্কায় সাতক্ষীরার আমচাষীরাও। ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপকূলীয় এ জেলাটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেলাটিতে চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় প্রায় চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৯৯টি আম বাগানে আম চাষ হচ্ছে। ১৩ হাজারের বেশি চাষী আম উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। চলতি মৌসুমে জেলাটিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

এসব আমের মধ্যে আগামী ৩১ মে থেকে হিমসাগর, ৭ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন থেকে আম্রপালি আম বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি চলছিল। এরমধ্যে ‘আম্পান’ এসে হিসেব এলোমেলো করে দিয়েছে। আমচাষীদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। তবে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়।

চাষিরা বলছেন, বাগানের বড় আম সব ঝরে গেছে। গাছের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে গাছে আমই নেই। অনেক গাছের ডালপালা ভেঙে গেছে।

রাজশাহী জেলার মধ্যে বাঘা উপজেলায় সবচেয়ে আম বেশি। সেখানেই ২৫ ভাগ আম পড়ে গেছে। তবে চারঘাটে ১০ শতাংশের বেশি আম পড়েনি। অন্যদিকে, নওগাঁয় আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার টন। ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮৫ হাজার আম ঝরে পড়েছে।

Exit mobile version