Site icon Jamuna Television

স্থূলদেহীদের জন্য সুখবর! চিকন হওয়ার ‘জিন’ শনাক্ত করেছে গবেষকরা

স্থূলদেহীদের জন্য সুখবর! চিকন হওয়ার 'জিন' শনাক্ত করেছে গবেষকরা

আজকাল চিকন হওয়ার জন্য কত সংগ্রামই না করে মানুষ। পরিমিত খাওয়াদাওয়া করাসহ নানা ধরনের ডায়েট চার্ট অনুসরণ করছেন অনেকে। কেউ কেউ জিমের দ্বারস্থ হয়েছেন। কষ্ট করে হলেও শুকানো যে চায়! কিন্তু এরই মাঝে কিছু মানুষ আছেন যারা কোনো ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ না করে, শরীরচর্চা না করেও শুকনা বা চিকন থাকেন। তাদের সেভাবে ওজন বাড়ে না। অথচ, কিছু মানুষ আছেন মেপে মেপে খেয়েও মোটা হয়ে যাচ্ছেন! তাদের জন্য সুখবর।

চিকন থাকার জিনগত কারণ অনুসন্ধান করেছেন গবেষকরা। সম্প্রতি চিকন থাকার কারণ একটি জিন আবিষ্কার করেছেন একদল গবেষক। গতকাল বৃহস্পতিবার ‘সেল’ সাময়িকীতে গবেষণা সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। গবেষক দলটি বলছেন, নতুন আবিষ্কৃত জিনটি স্থূলতা বা মেদ কমানোর চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা খুলতে পারে।

গবেষকেরা বলছেন, চিকন বা কম ওজনের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অনন্য এ জিনের সংস্করণটিকে বলা হয় ‘এএলকে’ জিন। এ জিনটি এক ধরনের প্রোটিন তৈরি করে যার নাম ‘অ্যানাপ্লাস্টিক লিম্ফোমা কিনেস’ যা কোষের বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত থাকে। এস্তোনিয়ার ২০ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৪৭ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যবান মানুষের চিকিৎসাগত তথ্য ও ডিএনএ নমুণা বিশ্লেষণ করে জিনের এ সংস্করণটি শনাক্ত করেন তারা।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও মেডিকেল জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক জোসেফ পেনিনগার বলেন, আমরা মানুষের জেনেটিক ম্যাপের সঙ্গে বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই)র সম্পর্ক বুঝার চেষ্টা করেছি। যাদের বয়স ১৮ এর কম তাদের তথ্য স্বাভাবিক ওজনের মানুষের সঙ্গে তুলনা করেছি। এতে দেখা গেছে, চিকন হওয়ার সাথে জেনেটিক সংস্করণের সম্পর্ক রয়েছে।

গবেষকেরা এলকে জিন কীভাবে কাজ করে, তা বুঝতে ইঁদুর ও মাছি নিয়ে গবেষণা করেন।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেটাবলিক ডিজিজ বিভাগের পরিচালক স্টিফেন ও’রাহিলি বলেন, গবেষণাটি এখনও চলমান। এটি সফল হলে স্থূলত্বের চিকিৎসার নতুন কৌশল আবিষ্কার হবে।

গবেষকেরা বলেন, বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই জানেন এএলকে জিনের এক ধরনের রূপান্তর (মিউটেটেড ফর্ম) ও বিশেষ প্রোটিন ক্যানসার টিউমার তৈরিতে কাজ করে। ফুসফুসের ক্যানসার কিংবা মস্তিষ্কের ক্যানসারে এদের উপস্থিতি পাওয়া যায়। নতুন এ গবেষণায় দেখা গেছে, ওই জিনটির একটি আলাদা মিউটেশন চিকন থাকার ও ওজন বাড়ার ক্ষেত্রে বাধা দিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ইঁদুর ও মাছিতে গবেষণা করে এর প্রমাণ মিলেছে। গবেষকেরা এটি জিনটি সরিয়ে দিয়ে চিকন ইঁদুর ও মাছি দেখতে পান।

ইতিমধ্যে ক্যানসার চিকিৎসায় এএলকে জিনের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আকারে ব্যবহৃত হচ্ছে, ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য চিকন রাখতে এর ব্যবহার হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

Exit mobile version