Site icon Jamuna Television

যন্ত্রণাহীন মৃত্যু চেয়ে ছাত্রের হাত ধরে রেখে মারা গেলেন চট্টগ্রামের করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক

‘নুর উদ্দীন প্লিজ আমার পাশ থেকে সরবেন না। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমার শেষ চাওয়া আপনি পাশে থেকে আমার পেইনলেস ডেথ এনশিউর করেন। প্লিজ আমি পেইনলেস ডেথ চাই।’

মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার আগে ছাত্রের হাত ধরে এটিই ছিল চট্টগ্রামের করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক ডা. এহসানুল করিমের শেষ কথা। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে নিজ ছাত্র ডা. নুর উদ্দিনের কাছে এমন করুণ আকুতি জানিয়েছিলেন এই চিকিৎসক। তার শেষ আকুতির কথা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ডা. নুর উদ্দিন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডা. নুর উদ্দিন যমুনা নিউজকে জানান, ডা. এহসান স্যার ছিলেন ভেন্টিলেটরযুক্ত আইসিইউতে। শেষ নিঃশ্বাসের ঠিক আগ-মুহূর্তে আমাকে বলেন পাশে থাকতে। যেন তার যন্ত্রণাহীন মৃত্যু নিশ্চিত হয়। এই কথা বলার পরপরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নুর উদ্দীন বলেন, স্যারের এই স্মৃতি সারাজীবন বইতে হবে। স্যার মানবিক চিকিৎসক। সারা জীবন নিঃস্বার্থভাবে সেবা দিয়েছেন। গেলেন, যাওয়ার সময় এত বড় দুঃখের বোঝা আর মেন্টাল ট্রমা দিয়ে গেলেন।

ডা. নুর উদ্দীন আরও জানান, বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টায় ডা. এহসানুলকে দেখতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। তাকে দেখেই এহসানুল হাত ধরে বললেন, নুর উদ্দীন প্লিজ আমার পাশ থেকে সরবেন না। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমার শেষ চাওয়া আপনি পাশে থেকে থেকে আমার পেইনলেস ডেথ এনশিওর করেন। প্লিজ আমি পেইনলেস ডেথ চাই। আমার যেন আর কষ্ট না হয় প্লিজ।

চারদিন আগে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এহসানুল করিম করোনা পজেটিভ হন। এর আগে থেকে তিনি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। করোনা থেকে সেরে উঠলে ক্যান্সারের বাকি চিকিৎসা করানোর কথা ছিল। কিন্ত তার আগেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এহসানুল করিম চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ এলাকার বেসরকারি মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তার সহকর্মীরা জানান, চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ চিকিৎসক যখন হাসপাতাল ও চেম্বারে সেবা বন্ধ রেখেছেন তখন ডা. এহসানুল চেম্বার খোলা রেখে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলেন।

আরও দেখুন: চট্টগ্রামে করোনায় চিকিৎসকের মৃত্যু

Exit mobile version