Site icon Jamuna Television

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে ইয়েমেনে

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে মরার ওপর খাড়ার ঘা, করোনাভাইরাস। মোট জনসংখ্যার বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু, মহামারির প্রভাবে তহবিলগুলো প্রায় শূন্য।

লাখ লাখ গৃহহীন মানুষের ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার সুযোগটুকুও নেই। এর মধ্যেই ইউনিসেফের দুঃসংবাদ, চলতি মাসেই ৩০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা না মিললে, জুলাইয়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ৪০ লাখ মানুষের বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতায় চালানো কার্যক্রম। জাতিসংঘের শঙ্কা, এ মাসেই ৪১টি কর্মসূচির ৩০টি বন্ধ হতে পারে। তাই, জরুরি ভিত্তিতে সহায়তার আহ্বান সংস্থাটির।

দীর্ঘ দিনের যুদ্ধে বিধ্বস্ত ইয়েমেনে, পুরোপুরি আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। করোনায় পাল্টে যাওয়া এক বিশ্বে, এসব প্রকল্পের বেশিরভাগই তহবিলের অভাবে বন্ধ হয়ে যাবে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল বলেন, প্রতি ৫ জনে ৪ জনের জীবন রক্ষার্থে সহায়তা প্রয়োজন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে ইয়েমেনে। তহবিলে এখনই আরও অর্থ দেয়া না হলে ৩০টির বেশি প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে।

ইয়েমেনি জনগোষ্ঠীর বড় অংশই দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে ভুগছে মারাত্মক অপুষ্টিতে। ভয়াবহ প্রকোপ কলেরা আর ডায়রিয়ার।

চলতি মাসের শুরুতে, দেশটির সহায়তায় ২৪০ কোটি ডলার তহবিল গঠনের টার্গেট নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করে জাতিসংঘ। সেখানে ১৩৫ কোটি ডলার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল দাতা গোষ্ঠী। যদিও এ পর্যন্ত জমা পড়েছে মাত্র ৪৭ শতাংশ অর্থ। অর্থ সহায়তার জন্য রীতিমতো আকুতি জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ওসিএইচএ’র মুখপাত্র জেনস লের্কে বলেন, অঙ্গীকারের পুরোটা অর্থ দ্রুততম সময়ের মধ্যে তহবিলে দেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ, ইউনিসেফ’সহ কয়েকটি সংস্থা জানিয়েছে, তারা কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। তহবিলের অভাবে এরইমধ্যে অনেক প্রকল্প বন্ধও হয়ে গেছে।

ইউনিসেফ’র মুখপাত্র ম্যারিক্সি মারক্যাডো বলেন, প্রায় ৮৪ লাখ মানুষ মৌলিক পরিচ্ছন্নতার জন্য ইউনিসেফের ওপর নির্ভরশীল। যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, জরুরি তহবিল না পেলে জুলাইয়েই প্রায় ৪০ লাখ মানুষ এই সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এতে বাড়বে কলেরা-ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি; বাড়বে করোনার সংক্রমণও।

বেহাল স্বাস্থ্যসেবার দেশটিতে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই মুহূর্তে করোনা রোগী ৬শ’র বেশি। মৃত্যু হয়েছে ১৩৯ জনের।

তবে, হুতি নিয়ন্ত্রিত উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত নয় এ তালিকায়। তাছাড়া প্রতি ১০ লাখে মাত্র ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয় দেশটিতে। তাই করোনা মহামারির প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

Exit mobile version