Site icon Jamuna Television

হাজারো মানুষের ভাগ্য বদলে দেয়া এক সেতু

একটি সেতু বদলে দিয়েছে গোটা এলাকার চিত্র। সহজ যোগাযোগের সাথে আর্থ সামাজিক অবস্থারও পরিবর্তন ঘটিয়েছে যশোরের মণিরামপুরের ‘ভাসমান সেতু’। সম্প্রতি উদ্বোধনের পর সেতুটির সুবিধা পেতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। মণিরামপুরের ঝাঁপা বাওড়ের আধা কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি ভাগ্য বদলে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের এক অসাধারণ উদাহরণ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে নিজেরাই ভাসমান সেতু বানিয়েছেন যশোরের ঝাপা বাওড়ের বাসিন্দারা। ৫৬ যুবকের উদ্যোগটির সুফল মিলতে শুরু করেছে।

সেতুতে যাতায়াতকারী এক যুবক জানালেন, আগে এখানে এসে অন্তত আধা ঘণ্টা না দাঁড়ালে নৌকা মিলতো না। অনেক সময় অপেক্ষার প্রহর আরও দীর্ঘ হতো। অসুস্থ কাউকে নিয়ে শহরে যেতে চাইলে তো ভয়াবহ অবস্থায় পড়তে হতো এখানে এসে।

আরেকজন জানালেন, পানি একটু কমে গেলে নৌকা থেকে নামার পর তীরে উঠতে হাঁটু সমান কাদা ভাঙতে হতো সবাইকে। নারী-শিশু আর বৃদ্ধরা এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হতেন।

ব্যস্ত ভাসমান সেতু

সেতুর পাড়ে দাঁড়িয়ে কথা হলো এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি জানালেন, কতটা উপকৃত হয়েছেন তার মতো ক্ষুদ্র কয়েকশ’ ব্যবসায়ী।

এত মানুষের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছিলেন মূলত এক যুবক। নাম তার রবিউল ইসলাম। অভাবের কারণে লেখাপড়া বেশিদূর না এগোলেও মেধার রাখলেন ভাসমান এই সেতুটি নির্মাণে। জানালেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েছেন তিনি। সেখানে প্রাপ্ত তথ্য, ছবি ও ভিডিও দেখে এমন কিছু নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। রবিউলকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন এলাকার অন্য তরুণ।

রবিউল বলেন, ‘ইন্টারনেটে দেখলাম পানির নিচে লোহার কাঠামো ছাড়াই ভাসমান ড্রাম দিয়ে সেতু বানানো সম্ভব। এরপর আমরা যুক্তি-পরামর্শ করে বের করলাম কিভাবে এখানে এত দীর্ঘ একটি সেতু করা যায়।’

‘আমাদের লক্ষ্য ছিল শুধু মানুষ নয়, যাতে ব্রিজ দিয়ে সাইকেল, মোটরবাইক, এমনকি ইজিবাইকও চলতে পারে এমনভাবে বানানো’, বললেন স্বশিক্ষিত এই কারিগর।

সেতুর নির্মাণ কাজে ৮৩৯টি প্লাস্টিকের বড় ব্যারেল আর ৮০০ মণ লোহা লেগেছে। গত ৩ জানুয়ারি ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়ার পর স্থানীয় যোগাযোগ ও আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে এটি।

মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল নিয়ে সেতু পার হন প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ

এভাবে ভাসমান ড্রামের নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি

 

Exit mobile version