Site icon Jamuna Television

‘শর্তের বেড়াজালে’ শিক্ষকের লাশ দাফন!

ফতেয়াবাদ সিটি করপোরেশন কলেজের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন আজ সকালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। গোসল ও কাফনের পর্ব শেষে আল মানাহিলের দল পেকুয়ার মগনামা ফেরি ঘাটে যায়। উদ্দেশ্য কুতুবদিয়ার দক্ষিন মলম চর গ্রাম। কিন্তু ঘাটের কোন স্টিমার বা লঞ্চ লাশ বহনে রাজী হয় নি। অনেক বুঝিয়েও কোন কাজ হলো না। সবার মুখে এক কথা ‘অচ্ছুৎ লাশ! এলাকাবাসীর মানা।’

শুরু হয় অপেক্ষার প্রহর। একপর্যায়ে জানা গেল, স্থানীয় কিছু লোকজন প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছে যাতে লাশটি ঐ গ্রামে দাফন না হয়। অবশেষে অনেক তোরজোড় করার পর কিছু শর্ত সাপেক্ষে ইউএনও লঞ্চে যাওয়ার অনুমতি দেন। তবে কোন আত্নীয়-স্বজনকে সাথে নেয়া যাবে না বলেও সতর্ক করা হয়। শুধুমাত্র আল মানাহিলের দলের লোকজনই যেতে পারবে লাশ দাফন করতে।

কিন্তু মৃতের দুই ভাই ছিলেন লাশের সাথে। পরে তাদের অবস্থা দেখে আল মানাহিলের লোকজন দুই ভাইকে পিপিই পড়িয়ে পুরো মুখ ঢেকে সাথে নিয়ে যান। তবে এখানেও শর্ত! কান্নাকাটি করা যাবে না। কারণ, কাঁদলে যে বাকি সবাই বুঝে যাবে!

এমন কঠিন শর্ত মেনেই ভাইয়ের লাশ দাফনে রওনা দেন দুই ভাই। সে শর্ত পুরো পথ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেও, মুনাজাতের সময় এক ভাই আর্তনাদ শুরু করেন। সেই আর্তনাদেই অনেকেরই বোধোদয় হয়। কিছু মানুষ নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায়। এমনকি কবর দেয়াতেও হাত লাগিয়েছিল তারা।

লাশ দাফন শেষে স্বজনদের চোখেমুখে ছিল তৃপ্তি; ছিল না কোন চোখের পানি। তাইতো সেখানে উপস্থিত কাউকে কাউকে বলতে শোনা যায়, ‘দাফন করতে পারাই যেখানে কোহিনুর পাওয়ার মত, শোক প্রকাশ সেখানে বিলাসিতা।’

Exit mobile version