Site icon Jamuna Television

ছবি বিতর্ক ভারতীয় মিডিয়ায়

গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সাথে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের এক অনুষ্ঠান শেষে ছবি তুলেছিলেন বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ।

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, প্রণব মুখার্জি একটি চেয়ারে বসে আছেন। তার পেছনে বাংলাদেশের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং মন্ত্রিসভার বর্তমান সিনিয়র সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছেন।

ভারতীয় হাইকমিশনের ফেসবুক পেইজে এই ছবিটিসহ অনুষ্ঠানের আরও কিছু ছবি পোস্ট করার পরই বিতর্ক শুরু হয়। অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর মতে, হাইকমিশনে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতির বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা হলেও বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির জন্য চেয়ার না থাকা ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন’।

বিতর্ক ওঠার পর ভারতীয় হাইকমিশন কর্তৃপক্ষ ফেসবুক পেইজ থেকে ছবিগুলো সরিয়ে ফেলে। তবে এই বিতর্ক নিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি পত্রিকা ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ আজ রোববার ‘Storm over sitting Pranab and standing VIPs’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বলেছে, “ছবিটি তীক্ষ্ম দৃষ্টিসম্পন্ন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ‘বাঙালি জাত্যাভিমানে’ আঘাত করেছে ও ব্যাপক ক্ষোভ সঞ্চার করেছে। এছাড়া ‘বড় ভাইসুলভ আচরণকারী’ ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও উপনিবেশি মানসিকতার অভিযোগ উস্কে দিয়েছে।”

“বিতর্কটি এমন তিক্ত অবস্থায় পৌঁছেছে যে, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন তাদের ফেসবুক ও টুইটার পেইজ থেকে ছবিগুলো সরিয়ে দিয়েছে”, লিখেছে দ্য টেলিগ্রাফ।

ভারতীয় হাইকমিশনের একটি সূত্রের বরাতে পত্রিকাটি লিখেছে, “বিষয়টা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা বিতর্ক আর বাড়াতে চাইনি, তাই ছবিগুলো সরিয়ে ফেলেছি।”

টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, “বাংলাদেশে হিন্দি ভাষার ভবিষ্যত উজ্জল- সম্প্রতি ভারতীয় হাইকমিশার শ্রিংলার এমন একটি বক্তব্য অনেকের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করার কারণে সেটিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।”

ভারতীয় আরেকটি পত্রিকা ‘স্ক্রল ডট ইন’-ও প্রণব মুখার্জির ছবি নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশি-আমেরিকান ব্যাংকার ও লেখক শাফকাত রাব্বীর ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে যদি ভারতের জন্য কোনো সত্যিকারের নিরাপত্তা হুমকি থেকে থাকে তাহলে তা হচ্ছে এখানকার সাধারণ মানুষের ভারতবিরোধী মনোভাব। আর এই মনোভাব মূলত তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় কর্তা ব্যক্তিদের উদ্ধত হস্তক্ষেপের কারণে।”

“(ভারতের) সমালোচনা বন্ধে শুরুর পদক্ষেপ হিসেবে হাইকমিশনের ফেসবুক পেইজ থেকে প্রশ্নবিদ্ধ ছবিগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে। তবে সামনের দিনগুলিতে এমন ক্ষোভ নিরসনে তাদেরকে আরও অনেক কিছু করতে হবে।”

Exit mobile version