Site icon Jamuna Television

অভিযান শেষে র‍্যাব সদর দফতরে সাহেদ; কী আছে সুটকেসে?

রাজধানীর উত্তরায় একটি বাসায় অভিযান শেষে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে ফের র‍্যাব সদর দফতরে নেয়া হয়েছে। উত্তরার সেই বাসাটির ৪ তলায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন সাহেদ। সেটি মূলত তার অফিস হিসেবে ব্যবহার হতো। সেখানে নানা ধরনের কাজ করতেন সাহেদ ও তার সহযোগীরা।

জানা গেছে, উত্তরার সেই বাসা থেকে সেখান থেকে খুব বেশি কিছু পাওয়া যায়নি। তবে একটি সুটকেস পাওয়া গেছে। এই সুটকেসে কী আছে সেই বিষয়ে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এখনই কিছু বলতে চাননি। তবে, একটি সূত্রে জানা গেছে এর ভেতরে জাল টাকা ও সাহেদের অপকর্মের কিছু প্রমাণ আছে।

এর আগে, বেলা ১২টার দিকে এই অভিযান শুরু হয়। বাড়ির দারোয়ান যমুনা নিউজকে জানিয়েছেন, রাতে হুটহাট করে সাহেদ বিভিন্ন সহযোগীসহ এখানে আসতেন। এখানে নানা ধরনের প্রযুক্তিপণ্যসহ তারা কাজ করতেন।

এর আগে, সাতক্ষীরা থেকে বিশেষ হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছে সীমান্তে র‍্যাবের হাতে আটক হওয়া মোহাম্মদ সাহেদকে। মঙ্গলবার সকালে ৯টায় সাহেদকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রাজধানীর পুরাতন বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় র‍্যাব সদর দফতরে।

তার আগে, সকাল ৮টায় সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম থেকে সাহেদকে নিয়ে রাওনা দেয় র‍্যাবের হেলিকপ্টার। বুধবার ভোরে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় গ্রেফতার হয়েছেন করোনা পরীক্ষায় নিয়ে প্রতারণা করে দেশজুড়ে সমালোচিত হওয়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম।

র‍্যাব জানিয়েছে, ক্ষণে ক্ষণে অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন ধুরন্ধর সাহেদ। চেহারা পরিবর্তনের জন্য চুলে রঙ করেছিলেন তিনি। কেটে ফেলেছিলেন গোঁফ। নৌকায় করে নদী পার হয়ে চলে যাচ্ছিলেন তিনি। র‍্যাবের বিশেষ টিম পৌঁছানোর পর পালানোরও চেষ্টা করেন। র‍্যাবের টিম দেখে নৌকার মাঝি সাঁতরে পালিয়ে যান। কিন্তু মোটা হওয়ায় আর দৌড়ে কিংবা সাঁতরে পালাতে পারেননি প্রতারক সাহেদ। এ সময় তার পরনে ছিল কালো রঙের বোরকা।

আটকের পর দেখা গেছে, সাহেদের গায়ের বিভিন্ন জায়গায় লেগে ছিল কাদা। কোমরে বাঁধা ছিল পিস্তল।

রিজেন্ট হাসপাতালে র‍্যাবের অভিযানের পর গা ঢাকা দিয়েছিলেন কখনও রাজনীতিবিদ, কখনও ব্যবসায়ী কিংবা সাংবাদিক পরিচয় দেয়া সাহেদ। সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোনও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া দেননি। এরমধ্যে, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান সাহেদের পিতা। কিন্তু সাহেদ প্রকাশ্যে আর আসেননি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে বলা হচ্ছিল সাহেদ আত্মসমর্পণ না করলে তাকে গ্রেফতার করা হবে। সেজন্য সবোর্চ্চ সচেষ্ট আছেন তারা। মঙ্গলবার র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ যমুনা নিউজকে জানান, সাহেদ দেশ ছাড়ার চেষ্টা করতে পারেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় বিশেষভাবে তৎপর আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সেদিন রাতেই গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মাসুদ পারভেজকে। তারপর থেকে যেকোনো সময় সাহেদকে গ্রেফতার করা হতে পারে এমন গুঞ্জন জোরালো হতে থাকে। সাহেদকে গ্রেফতারে বিশেষ তৎপর ছিল র‍্যাবের ইন্টেলিজেন্স।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, সাহেদ ভারতে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল। এর আগেও একবার একই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছিলো। বিশেষ হেলিকপ্টার যোগে তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

সাহেদের কাছ থেকে গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে র‍্যাব। নীল রঙের শার্টের ওপর কালো বোরকা পরে ছিলেন সাহেদ।

করোনা পরীক্ষা না করেই সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে গত ৮ জুলাই মামলা করে র‌্যাব। উত্তরা পশ্চিম থানায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।

এর আগে, গত ৬ জুলাই সোমবার র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত রিজেন্ট হাসপাতালের দুটো শাখায় (উত্তরা ও মিরপুর) অভিযান চালায়। বিভিন্ন অভিযোগের কারণে শাখা দুটির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। ৭ জুলাই বিকেলে উত্তরায় রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয় র‌্যাব।

Exit mobile version