Site icon Jamuna Television

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে প্রশিক্ষিত ফুটবলার রিপন এখন পরিচ্ছন্নতাকর্মী

জার্সি পরিহিত ডানে রিপন কুমার দাস।

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে ঝাড়ু হাতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করছেন ফরিদপুরের ফুলবলার রিপন কুমার দাস। সংসারের অভাব অনটন তাকে বাধ্য করেছে এ কাজে।

রিপনের এমন পরিস্থিতির জন্য জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও বাফুফের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এমন অবস্থা বলে মনে করছেন ফুটবলের সঙ্গে জড়িতরা।

ফরিদপুর শহরের রেল স্টেশন বস্তির বাসিন্দা মানো দাস ও পান্তা দাসের বড় ছেলে রিপন কুমার দাস। হরিজন সম্প্রদায়ের এই পরিবার পারিবারিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত। শৈশব থেকেই ফুটবল খেলার খুব আগ্রহ ছিল রিপনের। গ্রামের মাঠে খেলা দেখে রিপনকে নিজের একাডেমিতে নিয়ে এসে ভর্তি করে আবুল কাশেম ভোলা। অল্প বয়সেই পায়ের নৈপুণ্যে নজর কেড়েছিলেন তিনি। যাতে উৎসাহ দেয় পাড়া-পড়শি, বন্ধু-বান্ধবরাও। ধীরে ধীরে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দানা বাঁধে বুকে।

২০১২ সালে এয়ারটেলের সৌজন্যে দেশ ব্যাপী ফুটবলার হান্ট ক্যাম্পে ৬০ হাজার অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১২ জনকে বাছাই করা হয়। রিপন এই ১২ জনের অন্যতম সদস্য। এদেরকে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবে বেসিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। ১০ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে ঢাকা টিএন্ডটি ও আবাহনী ক্লাবে কিছুদিন খেলে রিপন। এর পরে ইনজুরি আর অর্থের অভাবে নিয়মিত খেলা হয়নি কোথাও, তবে প্রশিক্ষণ ছেড়ে দেননি এক দিনের জন্যও।

রিপনের বাবা ও মা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন সড়ক ও জনপদ বিভাগে। বাবা অসুস্থ থাকায় সেখানে মাস্টার রোলে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে রিপন। সারাদিন চাকরি করে বিকেলে ঠিকই এলাকার কোনো মাঠে ফুটবল নিয়ে নেমে পরে রিপন।

ফরিদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তা ও ফুটবল কোচ প্রণব কুমার মুখার্জী জানান, রিপন মিডফিল্ডে খেলে, ওর মত খেলোয়াড় আশে পাশের কোনো জেলাতেও নেই। এই প্রতিভাগুলোকে কাজে লাগানো উচিত। জেলা ক্রীড়া সংস্থা মাঝে মাঝে সহায়তা করে কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।

ফরিদপুরের ক্রীড়া প্রেমী মানুষ ও রিপনের বন্ধুদের দাবি ও আশা, বাফুফে একদিন ঠিকই রিপনদের কদর করবে, রিপনরা লাল সবুজ জার্সিতে খেলবে দেশ ও দেশের বাইরের মাঠে।

বাফুফের অনীহার কারণে দেশ সেরা এমন প্রতিভা হারিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য জেলা ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও রিপনের কোচ আবুল কাশেম ভোলার।

ইউএইস/

Exit mobile version