Site icon Jamuna Television

সুস্থ আছে রাবেয়া ও রুকাইয়া

আলাদা হয়ে প্রথমবারের মতো জন্মদিন পালন করছে দুই বোন রাবেয়া ও রুকাইয়া। পাবনার দুই শিশু জন্মগতভাবে মাথা জোড়া লাগানো অবস্থায় পৃথিবীতে আসে।

২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনা শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় জোড়া মাথার জমজ শিশু রাবেয়া-রোকাইয়া। দরিদ্র বাবা-মায়ের পক্ষে অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা করানো ছিলো অসম্ভব।

২০১৭ সালে অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশনের (এডিপিএফ) রাবেয়া-রুকাইয়ার চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। ঢাকায় এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। চূড়ান্ত অস্ত্রোপচারের আগে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, দুই বোনের বাঁচার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিটটি। রাবেয়া-রুকাইয়াকে হাঙ্গেরি পাঠানোর পর অপারেশনের মাধ্যমে তাদের মাথায় বিশেষ এক্সপান্ডার স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সফল হওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই বোনের ব্যয়বহুল চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা রাবেয়া-রুকাইয়ার ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন বাংলাদেশেই করানোর আগ্রহ দেখান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অপারেশনের সব আয়োজন করা হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।

গত বছর ২ আগস্ট টানা ৩০ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারেরর পর সফলভাবে দুই বোনের মাথা আলাদা করা হয়। হাঙ্গেরির চিকিৎসকদের সাথে ছিলেন বাংলাদেশি চিকিৎসকেরাও। শ্বাসরুদ্ধকর দীর্ঘ অপারেশনের পর জোড়া মাথার দুই বোন রাবেয়া-রুকাইয়াকে আলাদা করেছেন চিকিৎসকেরা। বাংলাদেশের চিকিৎসার ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক।

জটিল এই অপারেশনের সমন্বয়ক শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারির পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন যমুনা নিউজকে জানান, অপারেশনের পর থেকে রাবেয়া ও রোকাইয়া সিএমএইচে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে আছে। গত ১১ মাসে দুইটি শিশুর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এখন তারা নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। কথা বলতেও সমস্যা হচ্ছে না আলোচিত দুই জোড়া মাথার শিশুরা।
সন্তানদের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন রাবেয়া ও রোকাইয়ার বাবা-মা। এত জটিল অপারেশন এবং দেখভাল করার জন্য চিকিৎসক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।

Exit mobile version