Site icon Jamuna Television

সরকারি ড্রেন বন্ধ করে মাছ চাষ, জলাবদ্ধতা সৃষ্টির প্রতিবাদে মানববন্ধন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জে সরকারি ড্রেন বন্ধ করে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারীর বিরদ্ধে। এতে প্রায় ৪০ একর আবাদী জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন ড্রেনের মুখ খুলে দিয়ে আসলেও আবার তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গেল দু’বছরে অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। ইতোমধ্যে জলাবদ্ধতার কারণে ধানের চারা ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে ড্রেনটি খুলে পানি চলাচলের ব্যবস্থা নিতে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবীতে মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্থরা।

মঙ্গলবার বেলা ১২টায় রায়গঞ্জের হাজীরমোড় বাজারের পাশে এ মানববন্ধনে এলাকার সব বয়সের কয়েক’শো মানুষ অংশ নেয়।

তারা জানান, রায়গঞ্জ ইউনিয়নের দামালগ্রাম এলাকার মৃত আব্দুল গফুর মোল্লার ছেলে সৈয়দুর রহমান মাছ চাষের জন্য নিজের জমির পাশ দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের নির্মিত ড্রেন বন্ধ করে দেয়। এতে ওই এলাকার প্রায় ৪০ একর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পাট ও আমন চারা নষ্ট হলে স্থানীয় বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নাগেশ্বরী থানা অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগ করলে পুলিশ সরেজমিন গিয়ে ড্রেনের মুখ খুলে দিয়ে আসে।

কিন্তু আসার পর সৈয়দুর রহমানের ছেলে আঙ্গুুর ও আপেল আবারও ড্রেনের মুখ বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হলে আবুবক্কর সিদ্দিক মুকুল নামে এক কৃষক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তিনি এ বিষয়ে থানায় মামলাও করছেন।

তারা অভিযোগে উল্লেখ করেন, সৈয়দুর রহমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সহকারী হিসেবে লালমনিরহাটে কর্মরত থাকায় এলাকার ওয়াপদা বাঁধে থাকা বেশ কিছু গাছ কেটে নিয়েছে। এছাড়াও তার ছেলে আপেল ও আঙ্গুর এলাকায় একাধিক বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে নানা সময়ে প্রভাব দেখিয়ে হেনস্থা করেছেন।

আজিজার রহমানের রহমানের জোহরা বেগম জানান, অন্যের বাড়িতে কাজ করে টাকা জমিয়ে কিছু জমি বন্ধক নিয়েছেন। সে জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে ফসল হচ্ছে না। কৃষক রবিউল আলম জানান, এবারে তার পাট পচে গেছে পানির কারণে। আমন চারা নষ্ট হয়েছে কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিকের। তিনি জানান, এবারের আবাদ করা হয়নি। সামনে ফসলের জন্য বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। একই অভিযোগ মজিবর রহমানের।

এ বিষয়ে বাড়িতে গিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সৈয়দুর রহমান, আপেল ও আঙ্গুর কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তার চাচা সৈফুর রহমান ড্রেনের মুখ বন্ধ করার কথা স্বীকার বলে বলেন, পরে খুলে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা করার কারণে তারা মুখ বন্ধ করে রেখেছেন বলেও জানান তিনি।

রায়গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল ওয়ালিদ মাছুম বলেন, এর আগে আপেল ও আঙ্গুর ওই ড্রেনের মুখ বন্ধ করেছিল। অভিযোগ পাওয়ার পর খুলে দেয়া হয়েছে। আবারও যদি এমনটি হয় তাহলে তার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম বলেন, অভিযোগটি আমরা অনেক আগে পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। আমরা অবশ্যই এর ব্যবস্থা নেবো।

Exit mobile version