Site icon Jamuna Television

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বাতিল চায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং এই আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দাবি করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ (ডিইউজে)।

বৃহস্পতিবার ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের এক সভায় এমন দাবি জানানো হয়। এসময় ডিজিটাল কালো আইন পাসের দিন “১৯ সেপ্টেম্বরঃ মুক্তসাংবাদিকতার অন্তর্ধান দিবস” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেইসাথে এখন থেকে প্রতিবছর এই দিনটকে সাংবাদিক সমাজ “১৯ সেপ্টেম্বরঃ মুক্তসাংবাদিকতার অন্তর্ধান দিবস” হিসেবে পালন করবে বলেও জানানো হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, করোনাকালে যেখানে রাষ্ট্রকে মানবিক হওয়ার কথা ছিল সেখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক নিপীড়ন আরো বেড়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করায় সম্প্রতি সম্পাদকসহ সাংবাদিক, লেখক, কার্টুনিষ্ট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা একের পর ঘটেই যাচ্ছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অবাধ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ বিনষ্ট এবং গণমাধ্যমের কর্মীদের ওপর পুলিশের ক্রমবর্ধমান নিপীড়নমূলক পদক্ষেপে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, গত কয়েক মাসে প্রায় ৪০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব গ্রেপ্তারের ঘটনা এমন এক ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে স্বাভাবিক সাংবাদিকতার কাজও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সভায় বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে অন্য আইনের তুলনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এর কারণ হলো, এই আইনের আওতায় পুলিশ পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারে এবং এই আইনের বেশির ভাগ ধারাই অজামিনযোগ্য। ফলে এই আইনে গ্রেপ্তার হওয়ার পর একজন ব্যক্তিকে কারাগারেই রয়ে যেতে হয়।

বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অভিযুক্তরা খুন, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ বা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো ভয়ঙ্কর কোনো মামলার আসামি নন। তবুও তাদের জামিন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক, প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদ, পক্ষকাল ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল এবং দৈনিক কক্সবাজার বাণীর সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খানের জামিন আবেদন বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

এসময় তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করাসহ তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ারও দাবি জানানো হয়।

সেইসাথে সভাথেকে আরও কিছু দাবিও তোলা হয়ঃ
১. গণমাধ্যমে ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে এবং করোনাকালে চাকরিচ্যূতদের চাকরিতে পূর্ণবহাল করতে হবে।
২. অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।
৩. সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। এ লক্ষ্যে মিডিয়ার স্বাধীনতা বিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।
৪. প্রবীণ সাংবাদিক, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ,ফটোসাংবাদিক শহিদুল ইসলাম কাজল, দৈনিক কক্সবাজার বাণীর সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খানসহ গ্রেফতারকৃত সকল লেখক সাংবাদিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজি, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেই দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
৫. দৈনিক আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, সিএসবি টেলিভিশনসহ সকল বন্ধ মিডিয়া খুলে দিতে হবে।
৬. সাংবাদিক দম্পতি সাগর- রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে।
৭. পক্ষপাতহীনভাবে বেকার সাংবাদিকদের তালিকা করে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।

Exit mobile version