Site icon Jamuna Television

যেসব কারণে আমিরের তুরস্ক সফর নিয়ে ভারতীয়দের ক্ষোভ

ভারতের স্বাধীনতা দিবসে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনি এরদোগানের সঙ্গে আমির খানের সাক্ষাৎকে ভালো চোখে দেখছেন না ভারতীয়রা। ফলে তার তুরস্ক সফরকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়ছে দেশটিতে।

‘লাল সিং চাড্ডা’র শুটিং করতে গত সপ্তাহে তুরস্কে যান বলিউড পারফেকশনিস্ট। সেখানে গিয়ে তিনি দেশটির ফার্স্ট লেডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা ক্ষিপ্ত হয় এই বলিউড তারকার প্রতি।

তারা কেনো আমিরের তুরস্ক সফর মেনে নিতে পারছেন না তার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে কলকাতার প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।

কাশ্মির নিয়ে সাম্প্রতিককালে একাধিকবার ভারতবিরোধী মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান। বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন ঘিরে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা রাজধানী দিল্লিতে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল তা নিয়েও মোদি সরকারকে নিশানা করেছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

সম্প্রতি সেই এরদোগানের স্ত্রী এমিনির সঙ্গে সাক্ষাতের একাধিক ছবি ও ভিডিও সামনে আসায় আমির খানের প্রতি চটেছেন ভারতীয়রা।

আনন্দবাজার জানায়, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে যত দিন গড়িয়েছে তুরস্কের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে ভারতের। ২০১৭ সালে ভারত সফরে আসার আগে পাকিস্তানকে ‘মিত্র দেশ’ বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি কাশ্মির সমস্যায় মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন এরদোগান।

সম্প্রতি এরদোগান সরকার আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরিত করলে ভারতের অযোধ্যা মামলার সঙ্গে তার তুলনা শুরু হয়। তবে এ নিয়ে নিশ্চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি।

এমন পরিস্থিতিতে তুরস্কের ‘ফার্স্ট লেডির সঙ্গে আমির খানের এই ‘দহরম মহরম’ অনেকেরই চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে।

এছাড়া দুবছর আগে দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ভারত সফরে গেলে, গোটা বলিউড তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। কিন্তু আমন্ত্রণ জানানো হলেও সেদিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করতে যাননি শাহরুখ, সালমান, আমিররা।

তবে কেনো তারা নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করেননি তার কারণও ব্যাখ্যা করেছিলেন। সেই সময় বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের হত্যার বিরোধিতা করতেই ওই অনুষ্ঠান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন তারা।

তবে আমির খানের তুরস্ক সফরকে বিজেপি নেতারা কটাক্ষ করলেও তার পাশে দাঁড়িয়েছেন সাবেক আম আদমি পার্টির নেতা আশুতোষ। ভারতের অন্যান্য সমস্যাগুলো ধামাচাপা দিতেই খামোকা বিষয়টির রাজনীতিকরণ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

টুইটারে আশুতোষ লেখেন, আমি আমির খানকে সমর্থন করি। ভুয়া জাতীয়তাবাদীরা, যারা দেশের অর্থনীতি, করোনা পরিস্থিতি, চীনা আগ্রাসন এবং সরকারের কাজ নিয়ে কোনো আলোচনা হোক চান না, ইচ্ছাকৃতভাবে তারা বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা পাকাচ্ছেন।

ভারতীয় লেখক ও কলামিস্ট বিকাশ সারস্বত বলেছেন, ‘আমার স্ত্রী-রা হিন্দু হলেও, সন্তানরা যে শুধু ইসলাম মেনেই চলবে, তা সাফ জানিয়ে দিয়েছি আমি।

প্রসঙ্গত, আমির খানের তুরস্ক সফর এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালে ‘সিক্রেট সুপারস্টার’ ছবির প্রচারে গিয়ে আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট ভবনে এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেই সময় তোলা তাদের একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছিল।

ইউএইস/

Exit mobile version