Site icon Jamuna Television

করোনার অপবাদ দিয়ে লাশ দাফনে বাধা, পরে দেয়া হলো মিথ্যা মামলা

ফেনী প্রতিনিধি :

হত্যার ভয়ে ও জীবন বাঁচার তাগিদে এলাকা ছাড়া ফেনীর শর্শদীর একটি পরিবার। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে করোনা রোগের অপবাদ দিয়ে লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে এলাকার একটি সন্ত্রাসী চক্র। পরে সে লাশ বেওয়ারিশ লাশের সাথে দাফন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী শহরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। এলাকা ছাড়ার পরও মামলা ও হত্যার হুমকিতে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। জানমালের নিরাপত্তা ও পৈত্রিক ভিটে-বাড়ি ফিরে পেতে ঘুরছে মানুষের দ্বারে দ্বারে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান কামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের দক্ষিণ আবুপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুর রশিদ মোল্লার ছেলে কামাল উদ্দিন মোল্লার পরিবারের সাথে একই বাড়ির আবু আহম্মদের ছেলে সাঈদ রাহাত, মেজবাহ উদ্দিনদের সাথে পূর্বে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে।

তিনি বলেন, এ বিরোধের কারণে ১৩ এপ্রিল কামাল উদ্দিনের বড় বোন হাজেরা বেগম ঢাকার শ্যামলী সরকারি কিডনি হাসপাতালে কিডনি জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করলে তার বোনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মা-বাবার কবরের পাশে তাকে কবর দিতে আনলে নুর হোসেন সোহাগ, আবদুল কাদেরের ছেলে আবু আহম্মদ, আবু সাঈদ রাহাত, সম্রাট গংরা করোনা রোগী প্রচার করে লাশ এলাকায় নিতে বাধা প্রদান করে। লাশবাহী গাড়ির উপর হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর করে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। লাশ দাফন করতে বাধা প্রদান করে। লাশের গাড়িতে থাকা পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করে নারীদের লাঞ্ছিত করে।

এ সময় হামলাকারীদের এ রোগী করোনায় মারা যায়নি এবং কিডনি রোগী হিসাবে মারা যাওয়ার হাসপাতালের কাগজপত্র দেখাতে চাইলে তারা কাগজ না চেয়ে লাশ নিতে বাধা দেন। নিরুপায় হয়ে কামাল উদ্দিন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানাকে জানালে ইউপি চেয়ারম্যান
জানে আলম ভূঁইয়া ও ফেনী মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

একপর্যায়ে প্রশাসন ব্যর্থ হয়ে চেয়ারম্যান জানে আলম, পৌর কাউন্সিলর ফয়সালের সহযোগিতায় ফেনী পৌরসভার কবরস্থানে রাত সাড়ে ১২টার সময় লাশটি দাফন করা হয়। নিজের সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও বেওয়ারিশ কবরস্থানে বোনের লাশ দাফন করেন। লাশ দাফনে বাধা দেয়া ও হামলার ঘটনায় ফেনীর আমলী আদালতে কামাল উদ্দিন বাদি হয়ে ১০/১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলা ও বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করায় অভিযুক্ত আবু সাঈদ রাহাত ক্ষুব্ধ হয়ে কামাল উদ্দিন মোল্লাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় রাহাতের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। মামলার বাদি কামাল উদ্দিন ঢাকায় থাকলেও শত্রুতার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২১ আগস্ট সম্রাটের নেতৃত্বে এলাহীগঞ্জ বাজারে হামলার ঘটনা ও গোলাগুলির ঘটনায় কামাল উদ্দিনকে মিথ্যা আসামি করা হয়। এছাড়াও তাকে যে কোনো মুহূর্তে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে পুলিশে দেয়ার হুমকি প্রদান করা হয়।

ইউএইচ/

Exit mobile version