Site icon Jamuna Television

চতুর্থ দফা বন্যা আর নদী ভাঙন আতঙ্কে সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ের মানুষ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

চতুর্থ দফায় আবারও নতুন করে নদী ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ের মানুষ। নদীর পানি কমার সাথে সাথে জেলার কয়েকটি স্থানে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ধসে গেছে কাজিপুরে দুটি স্পার বাঁধ। এসব কারণে নদী তীরবর্তী মানুষগুলো চরম আশংকার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। তিনটি উপজেলার অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রোববার (২৩ আগস্ট) জেলার কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন রক্ষা বাঁধে দ্বিতীয় দফায় ধস দেখা দিয়েছে। এর একদিন আগে শনিবার (২২ আগস্ট) একই উপজেলা ঢেকুরিয়া নদীর তীর রক্ষা বাঁধের রিভার স্যাংক ধসে যায়। এতে বেশ কিছু পরিবার ভাঙন আতঙ্কে বাড়িঘর সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যায়।

অপরদিকে, চৌহালী উপজেলার সদিয়া চাঁদপুর, বাঘুটিয়া ও খাস পুখুরিয়া ইউনিয়নে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ইতোমধ্যে ওই তিনটি ইউনিয়নের চার শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চাঁদপুর ও বোয়ালকান্দি গ্রামের প্রায় ২৫/৩০টি বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়েছে। এছাড়াও শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন চলছে।

কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরকার জানান, গত ২৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় বাঁধে ধস দেখা দেয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার ধসে যায়। এতে করে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নাটুয়ারপাড়া হাট, স্কুল-কলেজসহ পুরো এলাকা। গত মাসেও ওই বাঁধের প্রায় ২শ’ মিটার নদীতে ধসে গেছে।

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, ঢেকুরিয়া নদী তীর রক্ষা বাঁধের নিম্নাংশে ধস দেখা দেয়ায় তীরবর্তী বেশ কিছু পরিবার আতঙ্কে বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছে। ইতোমধ্যে ওই ধস রোধ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

চৌহালীর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাহার সিদ্দিকী বলেন, বন্যার আগে থেকেই মেটুয়ানি, বিনানুই, চর নাকালিয়া গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। পানি কমার সাথে সাথে ভাঙনের তীব্রতা আরও বাড়ছে। এখন পর্যন্ত তিনটি গ্রামের প্রায় ৪ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে ৫ শতাধিক বাড়িঘর। এখন পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনরোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, মে মাসের শেষ থেকে যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। নিম্নাঞ্চলে কয়েক দফায় বন্যা হয়। যমুনায় পানি বৃদ্ধির কারণে তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে ঢেকুরিয়া ও নাটুয়াপাড়ার বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। তবে বালিভর্তি জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ধস ঠেকানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শাহজাদপুর উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে কৈজুরী প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার নদীতীর অরক্ষিত থাকায় সেখানে ভাঙন রয়েছে। এছাড়া কাজিপুরে পাটাগ্রাম এলাকাতেও অরক্ষিত রয়েছে ৫ কিলোমিটার। এ দুটি তীর রক্ষায় এক হাজার ১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইউএইচ/

Exit mobile version