Site icon Jamuna Television

স্বামীর কীটনাশক মেশানো জুস খেয়ে নববধূর প্রাণনাশের অভিযোগ

অভিযুক্ত রুবেল

পাবনা প্রতিনিধি:

বিয়ের চার মাসের মাথায় স্বামীর কীটনাশক মেশানো জুস খেয়ে প্রাণ গেলো আরিফা খাতুন (১৯) নামে এক নববধূর। স্বজনদের এমনই অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী রুবেল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার ভোরে পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের জগতলা গ্রামে বাবার বাড়িতে মারা যান ওই নববধূ। তিনি ওই গ্রামের আবদুল আজিজের মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ তার স্বামী ভবানীপুর গ্রামের বাহাজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল হোসেনকে আটক করেছে।

নিহত নববধূর চাচা আবদুল মজিদ জানান, মাস চারেক আগে আরিফা খাতুনের বিয়ে হয় রুবেল হোসেনের সাথে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য রুবেলের পরিবারের লোকজন বার বার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। যৌতুক পেলে তবেই আরিফাকে ঘরে তুলবে বলে জানায় রুবেলের পরিবার।

কিন্তু যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় বিয়ের পরেও শ্বশুর বাড়িতে ঠাঁই হয়নি আরিফার। গত বুধবার (২৩ আগস্ট) রুবেল শ্বশুর বাড়িতে আসে এবং হাতে করে আনা দু’টো জুসের প্যাকেটর মধ্যে একটি তার স্ত্রীকে খাওয়ায় এবং অন্যটি সে নিজে খায়।

সেই জুস খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন গৃহবধূ আরিফা। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়ার পরেও কোনো উন্নতি না হওয়ায় পার্শ্ববর্তী আটঘরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

তবে চিকিৎসক কীটনাশক পানে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কথা বলার পর রুবেল হোসেন বিষয়টি স্বীকার করে বলে জানা যায়।

পরে প্রাথমিক চিকিৎসায় সুস্থ না হওয়ায় পাবনা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়ার পর আরিফা খাতুনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে স্বজনরা। এরপর মঙ্গলবার ভোরে মারা যায় আরিফা।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার ও অভিযোগ পেয়ে রুবেল হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে থানা পুলিশ।

আবদুল মজিদ অভিযোগ করে বলেন, যৌতুক দিতে না পারায় বিয়ের পর থেকেই জামাই (রুবেল) এবং তার পরিবারের লোকজন ভাতিজিকে (আরিফা) বাড়িতে নিয়ে যায়নি। রুবেল আমাদের কাছে স্বীকার করেছে তার মা এবং মামারা মিলে জুসের বোতলে ঘাস মারা বিষ (কীটনাশক) মিশিয়ে কোনটা আরিফাকে খাওয়াতে হবে সেটি বলে দেয়।

ঘটনার ব্যাপারে চাটমোহর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেয়ে নিহত আরিফা খাতুনের স্বামীকে আটক করা হয়েছে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Exit mobile version