Site icon Jamuna Television

২৪ কিমি. পথ পায়ে হেঁটে গ্রামবাসীর কাছে মুখ্যমন্ত্রী!

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। ফলে যেখানেই যান, সেখানেই সঙ্গে যায় তার গাড়ির বিশাল বহর। কিন্তু পাহাড়-জঙ্গলের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে এমন অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম রয়েছে যেখানে যাওয়ার ঠিকমতো রাস্তা নেই। তার ওপর পাহাড়ি পথ। কোনো সমস্যা নেই। হেঁটেই রওনা দিলেন তিনি। ১১ ঘণ্টা ধরে ২৪ কিলোমিটার ট্রেক করে রাজ্যের প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্দু। খবর এনডিটিভির।

অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং জেলার মুক্তো এলাকা তার নিজের নির্বাচনী এলাকার মধ্যেই পরে। তাওয়াং থেকে ৯৭ কিলোমিটার দূরে জঙ্গল-পাহাড়ে ঘেরা লুংথাং গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করতে যান ৪১ বছরের মুখ্যমন্ত্রী। আর তার জন্যই ট্রেক করতে হয় তাকে। বৃহস্পতিবার এই যাত্রার কথা টুইটও করেন পেমা খান্দু। তিনি লিখেন, ‘খারপু লা (১৬ হাজার ফুট) অতিক্রম করে লুংথাং (১৪ হাজার ৫০০ ফুট) যাওয়ার এই অভিজ্ঞতা এক কথায় অসাধারণ। লুংথাংয়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হল। তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনলাম। সরকারের সব রকমের সুবিধা যেন সেখানে পৌঁছায় সেই চেষ্টা করব।’

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতায় থাকা থিংবু তেহসিলে ১০টি ঘর রয়েছে। সেখানে ৫০ জন বাস করেন। তাদের সঙ্গে দেখা করতেই ১১ ঘণ্টা ট্রেক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই লুংথাং যাওয়ার কোনো পাকা রাস্তা নেই। এখানকার বাসিন্দাদের পাহাড় ভেঙেই যাতায়াত করতে হয়। তবে এই যাত্রার সময় আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মতো। শুধু খারপু লা নয়, এই যাত্রাপথের মধ্যে অসংখ্য লেক অতিক্রম করতে হয়, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মতো।

লুংথাংয়ে গিয়ে এক গ্রামবাসীর বাড়িতে দু’রাত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরের দিন তিনি, তাওয়াংয়ের বিধায়ক সেরিং তাশি, তাওয়াং মনেস্ট্রির সাধু ও গ্রামবাসীরা জাংচুপ স্তূপে একটি প্রার্থনা সভায় অংশ নেন। এই স্তূপ তৈরি করা হয়েছিল পেমা খান্দুর বাবা তথা অরুণাচল প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দর্জি খান্দুর নামে। ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল তাওয়াং থেকে ইটানগর যাওয়ার সময় এই লুংথাং গ্রামের কাছেই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

লুংথাংয়ের বাসিন্দারা হলেন ব্রোকপা জনজাতির মানুষ। তাদের পেশা হল পশুপালন। গ্রীষ্মকালে পশুপালনের জন্য হিমালয়ের উপরের দিকে উঠে যান তারা। শীতকালে আবার নিজেদের গ্রামে তারা ফিরে আসেন। এই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করতেই ট্রেক করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Exit mobile version