Site icon Jamuna Television

রাখাইনে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, নিহত ৩২

আবারও উত্তেজনার মুখে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। গতরাতে এই রাজ্যের ২৪টি টহল চৌকিতে বন্দুকধারীদের একযোগে হামলার ঘটনায় মোট ৩২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে, ১১ জন পুলিশ ও সেনা সদস্য রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহত অপর ২১জনের সবাই হামলাকারী বলে ধারণা করা হচ্ছে । আরাকান-রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি- এআরএসএ হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাগুলো। নির্যাতন বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া সংক্রান্ত আনান কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই রক্তক্ষয়ী এই ঘটনা ঘটে।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি, রাখাইনের উত্তরে মংডুর ২৪টি পুলিশ টহল চৌকিতে এক যোগে হামলা চালানো হয়। হামলা হয় খামারার সেনা ঘাটিতেও। দেশটির রাষ্ট্রীয় মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানায়, অন্তত দেড়শ’ বন্ধুকধারী রোহিঙ্গা সেনাঘাঁটিতে হামলার চেষ্টা চালায়। ব্যবহার করা হয় হাতে তৈরি শক্তিশালী বোমাও।

রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে কফি আনান কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের একদিন পরই এই রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটলো। প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বন্ধ না করলে, পুরো রাখাইন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে উগ্রপন্থা।

রোহিঙ্গা কমিশনের চেয়ারম্যান কফি আনান বলেন, রাখাইন সংকট সমাধানে নাগরিকত্ব, চলাফেরার স্বাধীনতা এবং সুযোগ সুবিধা প্রদান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বেশকিছু সুপারিশ আমরা তুলে ধরেছি। সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা হয়েছে। শান্তি আনতে অবশ্যই দমনপীড়ন বন্ধ করতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

কমিশনের সুপারিশ অনুসারে যথাসম্ভব দ্রুত সংকট সমাধানে কাজ করার আশাবাদ জানিয়েছে অং সান সুচি প্রশাসন। এক বিবৃতিতে বলা হয়, সুপারিশ কার্যকর করতে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। এতে মন্ত্রী ছাড়াও সদস্য হিসেবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। তবে রাতারাতি এ সংকটের সমাধান সম্ভব নয় বলেই জানায় মিয়ানমার প্রশাসন।

গত বছর অক্টোবরে রাখাইনে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগে সেনা অভিযান শুরু হয়েছিল। সেই অভিযানে প্রাণ হারায় শতাধিক রোহিঙ্গা। পুড়িয়ে দেয়া হয় কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ি। এই অবস্থায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ।

চলতি মাসে উত্তেজনা শুরু হওয়ায় গেল সপ্তাহে নতুন করে আরও সেনা মোতায়েন করতে শুরু করে মিয়ানমার সরকার। এরই মধ্যে আবারও হামলা রাখাইনের পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলবে বলেই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

যমুনা অনলাইন: টিএফ

Exit mobile version