বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে পরিকল্পিতভাবে নিজ পুত্র সন্তানকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মা ও তার দুই পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুই আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম শহীদ আহমেদ।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানার রতনপুর গ্রামের কনা বেগম, তার দুই পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন নলি ও শাহীন নলি। এদের মধ্যে শাহীন নলি পলাতক রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী লস্কর নূরুল হক জানান, কনা বেগমের স্বামী লকিতুল্লাহ দুয়ারি চট্টগ্রামের চাকতাই এলাকায় দিন মজুরের কাজ করতেন। তার অবর্তমানে শাহীন নলির সাথে কনা বেগমের অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানতে পারে রুহুল আমিন নলি। পরে তার সাথেও অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হয় কনা বেগম।
২০১৩ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি তিনজনকে এক সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত থাকা অবস্থায় দেখে ফেলে কনা বেগমের ছেলে, কাজীরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রনি। এঘটনা বাবাকে জানানোর কথা বলে রনি। এসময় দুই প্রেমিকের সহায়তায় রনিকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে মা কনা বেগম।
রনিকে সাপে কেটেছে প্রচার চালিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করতে চাইলে সন্দেহ হয় স্থানীয় ইউপি সদস্যের। থানায় খবর দেয়া হলে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ২২ ফেব্রুয়ারি কাজীরহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন রনির পিতা লতিকুল্লাহ দুয়ারি।
২০১৪ সালের ২৭ মার্চ রুহুল আমিন নলিকে গ্রেফতার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে মাসহ ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম।
২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দিয়েছেন আদালত।

