Site icon Jamuna Television

নেত্রকোণায় হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা
নেত্রকোণা শহরের ছোট বাজারস্থ সুনেত্র হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি আইরিন পারভীন ঝর্ণার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

ঝর্ণার স্বজনদের অভিযোগ, সোমবার (১২ অক্টোবর) বেলা তিনটার দিকে
হাসপাতালটিতে চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ রায় ঝর্ণার সিজার করেন। দুই কন্যা সন্তানের জননী ঝর্ণা সদর উপজেলার লহ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের আতকা পাড়া গ্রামের নূরে আলম খোকনের স্ত্রী।

ঝর্ণার দেবর মো. আল মাসুদ ও ভগ্নিপতি আব্দুল মান্নান জানান, চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণ রায় সিজারের সময় ভুলবশত প্রসাবের থলি কেটে ফেলেন৷ পরে তার ব্লিডিং শুরু হলে আর বন্ধ হচ্ছিলো না। পরিস্থিতি বুঝে একবারের পরিবর্তে তিনবার অপারেশন থিয়েটার (ওটি) নেন। এবং পরবর্তীতে কেটে ফেলেন রোগীর জরায়ু। এভাবে জটিলতা বাড়তেই থাকে এবং অবিরত চলতে থাকে ব্লিডিং। এতে শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে প্রসূতির।

একপর্যায়ে সোমবার দিনগত রাতে ঝর্ণাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী মমেকে নিয়ে যাওয়া হয়। নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহ ঝর্ণার শরীরে পুশ করা হয় ১০ ব্যাগ রক্ত।

এদিকে মমেক হাসপাতালে গিয়ে পড়তে হয় ভোগান্তিতে। সুনেত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাঠানো লোক রোগীর সাথে থাকা চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সটকে পড়েন। এতে মমেক থেকে চিকিৎসা নিতে বেগ পেতে হয়।

এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম খান জানান, কাগজগুলো রোগীর প্রয়োজন নেই। এগুলো হাসপাতালে রাখতে হয় সেজন্য নিয়ে আসা হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসকের মন্তব্য জানতে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সুনেত্র থেকে ঝর্ণাকে রাতে মমেকে পাঠিয়ে দ্রুত অপর একটি হাসপাতালে চলে যান অভিযুক্ত চিকিৎসক। এসময় ওই হাসপাতালে গিয়েও তার সাথে কথা বলাও সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকালে মমেকে চিকিৎসাধীন মারা যান ঝর্ণা। কিন্তু বিকেল ৩ টা পর্যন্ত এই রিপোর্ট লেখা পযর্ন্ত অভিযুক্ত চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণের সাথে কথা বলা বা সাক্ষাৎ সম্ভব হয়নি।

লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল কাদের সুজা বলেন, একজন প্রসূতি মায়ের প্রসবকালীন সময়ে একঘণ্টার মধ্যে তিন বার ওটিতে নিয়ে অপারেশন করে মূত্র থলি, জড়ায়ু কেটে রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া অন্যায়। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নয়তো এধরণের ঘটনা আরো ঘটবে।

নেত্রকোণা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুর্শেদা খাতুন জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। ঝর্ণার পরিবারের লোকজন অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, চিকিৎসক জীবন কৃষ্ণের হাতে এরআগেও একাধিক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।

Exit mobile version