Site icon Jamuna Television

নিজের স্বল্প আয় থেকে বাঁচিয়ে প্রতিদিন পাখিদের খাওয়ান ভ্যানচালক রিপন

আহমেদ নাসিম আনসারী, ঝিনাইদহ:

ভোর হলেই যেন তার জন্য অপেক্ষা করে শালিকের ঝাঁক। করোনার কারণে আয় রোজগার কম। তারপরও প্রতিদিন সকালে নিজের স্বল্প আয় থেকে কিছুটা বাঁচিয়ে ক্ষুধার্ত পাখিদের খাবার দেন ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার ভ্যানচালক রিপন হোসেন।

প্রতিদিন সকালে গাড়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় রিপন হোসেন দোকান থেকে খাবার কিনে রাস্তায় ছিটিয়ে দিচ্ছেন। আর শালিক পাখির ঝাঁক যেন খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। খাবার খাওয়ার দৃশ্য দেখে রিপনের ঠোটে ছিল তৃপ্তির হাসি।

ভ্যানচালক রিপনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গাড়াগঞ্জ বাজারপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। ব্যাটারি চালিত ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে তার সংসার। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর মধু বিশ্বাসের দোকানের সামনে এলেই শালিকের ঝাঁক তাকে দেখে কিচির মিচির শব্দ শুরু করেন। নিজের অল্প আয় থেকে টাকা বাঁচিয়ে পাউরুটি, চানাচুরসহ নানা প্রকার খাবার দেন তিনি। পাখিদের কিচির মিচির শব্দ আর খাবার শেষে পাখিদের জলকেলিতে মাতার দৃশ্য যেন মনোমুগ্ধকর। যা দেখে মুগ্ধ মুগ্ধ আশপাশের মানুষগুলো।

চা দোকানি মধু বিশ্বাস বলেন, সকালে পাখিগুলো যখন খাবার খাই তখন দেখতে খুবই ভালো লাগে। কিচির মিচির শব্দ করে যা শুনে মনটা ভরে যায়।

একই এলাকার হেলাল উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে এখন মানুষের আয় রোজগার কম। মাঠে ঘাটে এখন খাবার কম। যে কারণে শালিক পাখির দল বাজারে ভিড় করে। রিপন হোসেন খাবার দেন এতে স্থানীয় অনেকেই মাঝে মাঝে সহযোগিতা করে। তারপরও তা পর্যাপ্ত না।

এ ব্যাপারে পরিবেশ ও জৈববৈচিত্র সংরক্ষণ কমিটির ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে যারা পাখির খাবারের ব্যবস্থা করেন তাদের সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা উচিত। শুধু সহযোগিতায় নয়, পাখির সংরক্ষণ ও তাদের খাবারের ব্যবস্থা যদি করা হয় তাহলে একসময় ঝিনাইদহ জেলা হবে পাখির অভয়াশ্রমের মডেল।

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, করোনা মহামারিতে শুধু মানুষ নয় পক্ষীকুলও খাবার সংকটে আছে। যারা পাখিদের খাবারের ব্যবস্থা করছেন তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা সবসময় তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।

Exit mobile version