Site icon Jamuna Television

ফেসবুকে ফাঁদ: নারী সেজে প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার ১

ফেসবুকে নারী সেজে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে এক প্রতারককে আটক করেছে র‍্যাব-৪।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে র‍্যাব-৪, সাইবার মনিটরিং সেলের একটি চৌকস আভিযানিক দল নরসিংদী জেলাধীন মনোহরদী থানা এলাকায় মনোহরদী পৌরসভা বাজার হতে অভিযুক্ত প্রতারক মাসুক মিয়াকে (২৮) গ্রেফতার করে। তার বাড়ি সিলেট জেলায়।

র‌্যাব-৪ এর কাছে বিভিন্ন সময় অভিযোগ আসে যে, মেয়েদের নামে ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে সুন্দরী মেয়ের ছবি দিয়ে বিভিন্ন জনকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে বিকাশের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ভুয়া আইডি ও প্রোফাইল পিকচার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করে সেখানে সুন্দরী নারীর ছবি, বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ করা হয় এবং একবার এই আমন্ত্রণে সাড়া দিলেই হয় মোবাইল নম্বর লেনদেন। দীর্ঘ সময় ধরে হয় নারী কণ্ঠে বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপ, প্রেম, ভালোবাসা। এর একপর্যায়ে বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য সে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করেন। পথে দুর্ঘটনা আবার কখনও হাসপাতালে ভর্তি, তাৎক্ষণিক মিটমাট করার জন্য প্রয়োজন ২৫/৩০ হাজার টাকা। কিন্তু সাথে এত টাকা নাই, তাই বন্ধুর শরণাপন্ন হতে হয়। বন্ধু ও সরল বিশ্বাসে ভালোবাসার টানে বিকাশের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত টাকা পাঠিয়ে দেন। তারপর থেকে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

তারা কখনো ভিডিও কলে কথা বলেন না, তাতে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। কণ্ঠ পরিবর্তন করে মেয়ের কণ্ঠে কথা বলে কখনো প্রবাসী সুরেলা নারী, কখনো পুলিশ অফিসার, কখনো মেয়ের মা, কখনো মেয়ের বোন সেজে নিপুণ অভিনয় করে প্রতারক বিকাশের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এত কৌশল কণ্ঠ অভিনেতা হয়েও শেষ পর্যন্ত তার শেষ রক্ষা হলো না।

গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অভিযুক্ত ডিজিটাল প্রতারক মাসুক মিয়া Soniya Akter keya নামে ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে Tanzim Mehezabin Khan Sneha নামক মেয়ের ছবি প্রোফাইল পিকচার ব্যবহার করে নিজেকে লন্ডন প্রবাসী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ছেলেদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। কখনো ম্যাসেঞ্জারে, আবার কখনো মোবাইলে সরাসরি কণ্ঠ পরিবর্তন করে মেয়ে কণ্ঠে কথা বলে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় প্রতারণা করে নিরীহ ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ১৫-২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছে এবং এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে এইরূপ অসাধু ডিজিটাল প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ইউএইচ/

Exit mobile version