Site icon Jamuna Television

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাল দলিল চক্রের সন্ধান, আটক ২

আটক সাধন ও রুস্তম।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুয়া দাতা সেজে জায়গা দলিল করে দিতে এসে ধরা খেয়েছে জাল দলিল চক্রের দুই সদস্য। তাদেরকে আটক করেছে পুলিশ।

জাল দলিলটির লেখক সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাহারুল। তিনি দলিল লেখক সমিতিও সাধারণ সম্পাদক। তিনিও এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর সাব রেজিষ্টারের এজলাসে বিজয়নগর উপজেলার চর-পাচগাও মৌজার বিএস চূড়ান্ত ৭২৭ খতিয়ান ভূক্ত বিএস ৪৪৫৭ দাগের ৩৫ শতক জমি নিবন্ধনের জন্যে দাখিল করা হয়। খতিয়ানে জমির মূল মালিক হিসেবে মৃত চন্দ্র কিশোর শর্মার ছেলে হরেন্দ্র কান্ত শর্মার নাম উল্লেখ থাকলেও নিবন্ধনের জন্য দলিল দাখিল করেন সাধন সরকার।

সে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে পিতা অবচরণ সরকারের পরিবর্তে হরেন্দ্র কান্ত শর্মা ও নিজের নামে সাধন শর্মা লিপিবদ্ধ করে। আর দলিলটির গ্রহীতা হিসেবে নাম রয়েছে বিজয়নগর উপজেলার চর ইসলামপুর গ্রামের মৃত মন্ডল হোসেনের ছেলে ইয়াছিন মিয়ার। দলিলে জমির মূল্য দেখানো হয় ১ লাখ ৮ হাজার টাকা।

সদর সাব রেজিষ্টার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. ইয়াছিন আরাফাত জানান, দলিলটি নিবন্ধনের জন্য জমা পড়ার পর তিনি জানতে পারেন দলিলটির লেখক দলিল লেখক সমিতি সাধারণ সম্পাদক কাজী সাহারুল। এরপর দলিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার এক পর্যায়ে আমি দেখি ওই খাতিয়ানে একটাই দাগ এবং এতে জমি আছে ৩৫ শতক। পুরো জমিটি দিয়ে দিচ্ছে, তার আর কোন ভাই আছে কিনা জানতে চাই। তখন সে বারবারই আমাকে জানায় তার কোন ভাই নেই। এরপর আমি দলিলটি টিপসহির জন্য পাঠিয়ে দেই।

তারপরও আমার সন্দেহ হলে আমি অ্যাপসের সাহায্যে এনআইডি পরীক্ষা করি। দেখি সেটি জাল। এরপরই আমি টিপসহি নিতে নিষেধ করি। নিবন্ধন মহা পরিদর্শকের সাথে কথা বলে মূল দলিলটি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দলিল দাতা সাধন শর্মা জানান তার নাম সাধন সরকার, চক্রটি এনআইডি পরিবর্তন করে তার নাম লেখে সাধন শর্মা। পাশাপাশি জমির মালিক সে নিজে, তা বলার জন্যে শিখিয়ে দেয়া হয় তাকে।

প্রতারক রুস্তম আলী জানান, সে আগেও কাজী সাহারুলের মাধ্যমে একাধিক দলিল করেছে। এরপরে সদর মডেল থানা পুলিশ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে দুই জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে ঘটনার পর নিজের দায় এড়াতে তৎপর হন দলিল লেখক আ’লীগ নেতা কাজী সাহারুল। সাধন সরকার ও রুস্তম আলী বিরুদ্ধে নিজে উদ্যোগী হয়ে মামলা দেয়ার প্রস্তুতি নেন। যদিও দলিলের শেষাংশে তার স্বাক্ষরের আগে অঙ্গীকার রয়েছে। তবে দলিল লেখক আ’লীগ নেতা কাজী সাহারুল দাবি করেন এই প্রতারকদের তিনি চেনেন না। এই চক্রের সাথে তিনি জড়িত নন বলেও দাবি করেন।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম জানান, সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে এই ব্যাপারে মামলা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। দলিল সম্পাদনে যারা জড়িত তারা সবাই এতে আসামি হবে বলে জানান তিনি।

Exit mobile version