Site icon Jamuna Television

পটুয়াখালীতে নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুন্দ্রা কলাগাছিয়া গ্রামে বিয়ের দুই মাসের মাথায় আদুরী বেগম (১৮) নামের এক নববধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর পর ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই আদুরীর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে।

আদুরীর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আদুরীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন শেষে মেরে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।

নিহতের ভাবী খাদিজা বেগম জানান, দীর্ঘ ৪ বছর প্রেমের সম্পর্কের পর দুই মাস আগে ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে উপজেলার একই গ্রামের স্বপন শিকদারের ছেলে সুমন শিকদার (২২) ও সুলতান হাওলাদারের মেয়ে হাবিবা আক্তার ওরফে আদুরী (১৮)। এক মাস পূর্বে নব দম্পতি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। আদুরীর স্বামী সুমন শিকদারের সাথে একই এলাকার এক তরুণীর পরকীয়া সম্পর্ক আছে এমন সন্দেহে স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। এক পর্যায়ে গত কয়েকদিন ধরে আদুরীকে মারধরও করতে পিছ পা হননি সুমন।

খাদিজা আরও জানান, মারধরের খবর শুনে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আদুরীর মা তাকে
নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু ওইদিন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার দিকে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে মসজিদে মিলাদ অনুষ্ঠানের কথা বলে শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম পুত্রবধূ আদুরীকে বাবার বাড়ি থেকে সুমনের বাড়ি নিয়ে আসে।

সুমনের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাত ১০টার
দিকে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পরকীয়া বিষয় নিয়ে পুনরায় ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে আদুরী রাগ করে স্বামীর ঘর থেকে বাহিরে চলে যায়। দীর্ঘ সময় পরেও আদুরী বাহির থেকে ফিরে না আসলে বাড়ির লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি করে। আদুরীকে না পেয়ে পাশেই বাবার বাড়িতে গিয়েছে কিনা খোঁজ নেয়। বাবার বাড়িতেও খুঁজে না পাওয়ায় উভয় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে বাবার বাড়ির বসত ঘরের পিছনে একটি আম গাছের সাথে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় আদুরীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ওই রাতেই মরদেহটি উদ্ধার করে।

এদিকে, নিহতের বোন দোলা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, সুমন মাদকাসক্ত ও বেকার ছিল। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও জাকিয়া নামের এক তরুণীর সাথে সুমনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে কথা বললে সুমন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতো এবং আদুরীকে মারধর করতো। সুমনের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়েই আদুরী মারা গেছে। পরে তাকে গাছের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে।

মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম.আর শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ইউএইচ/

Exit mobile version