Site icon Jamuna Television

কক্সবাজারে বন্য হাতিটিকে বৈদ্যুতিক শক ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছিলো

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের শাইরার ঘোনা নামক এলাকায় মারা যাওয়া বন্য হাতিটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তে হাতিটিকে বৈদ্যুতিক শক ও গুলি করে হত্যার প্রমাণ মিলেছে।

বন বিভাগের পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান রোববার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাতিটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর সেখানেই মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। রামু উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. জুলকার নায়েক এর বরাতে রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, ময়নাতদন্তে হাতিটিকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মারার প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া পায়ে একটা গুলির চিহ্নও রয়েছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে স্থানীয় গ্রামবাসী কেউ আশেপাশের বাড়ি ঘর থেকে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ পেতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

তিনি আরও জানান, হাতিটি যেখানে মারা গেছে সেটি এলাকাবাসীর জোত জমি। এর পাশেই রয়েছে বন। আর আশেপাশে লোকজনের ঘরবাড়িও রয়েছে। এসব বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। কোনো বাড়িঘর থেকে লম্বা তার দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটিয়ে হাতিটিকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়গুলোতে খাবার না থাকায় হাতির পাল মাঝেমধ্যে চাষাবাদের জমিতে ও বসতবাড়িতে হানা দিয়ে থাকে।

এদিকে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনয় চাকমা রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বৈদ্যুতিক শক ও গুলি করে হাতি হত্যার আলামত পাওয়া গেছে।

এছাড়াও রোববার ভোরে রামু ইউনিয়নের জোয়ারিয়া নালা এলাকায় আরও একটি বন্য হাতির উপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আহত হাতিটিকে বন বিভাগের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

গত দুই বছরে কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় অন্তত ১২টি হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, উখিয়া-টেকনাফের ১০ হাজার একর গভীর বনাঞ্চল গত তিন বছর আগে ১১ লাখ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধীনে চলে যাওয়ায় দিন দিন হাতিগুলোর আবাসস্থল ও বিচরণক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে আসছে। পুরো এলাকায় রোহিঙ্গাদের বিচরণ বেড়ে যাওয়ায় রামু-উখিয়া-টেকনাফের সঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি বান্দরবানের হাতির ২৩টি নিরাপদ চলাচলের করিডোর রুদ্ধ হয়ে গেছে। এ এলাকায় ৬০টিরও অধিক হাতির চলাচল পথ রুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, রোববার সকালে বন বিভাগের লোকজন শাইরার ঘোনা নামক এলাকায় মৃত হাতিটির সন্ধান পান। সেসময় প্রাথমিকভাবে মৃত হাতিটির শরীরের বাহিরের দিকে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না বলে জানিয়েছিলেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

ইউএইচ/

Exit mobile version