Site icon Jamuna Television

অন্তঃসত্ত্বা ফাতেমাকে মেরে বালিচাপা দেয় ইউনুস

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ফাতেমা বেগম হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ক্লুলেস এই হত্যার প্রধান আসামি ইউনুস আলীকে সিলেটের জৈন্তাপুর বাংলাদেশ ভারতের সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি হত্যার বর্ণনা দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।

শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত পিবিআই’র নারায়ণগঞ্জ অফিসের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই’র নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, নিহত ফাতেমা বেগম ও ইউনুস আলী আড়াইহাজারের গোপালদী মানিকনগর এলাকায় পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করতো। মালয়েশিয়া ফেরত ইউনুস আলী সাথে তালাকপ্রাপ্তা ফাতেমা বেগম প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্ক খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শারিরীক সম্পর্কে গড়ায়। মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ফাতেমা বেগম। এরপরে ইউনুসকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে ফাতেমা।

এদিকে ইউনুস আলীর পরিবারের বিষয়টি জানতে পেরে ইউনুসকে অনাত্র্য বিয়ে দেয়ার জন্য পাত্রী দেখছিলো। ইউনুস আলী কোনভাবেই যাতে ফাতেমার সাথে সম্পর্ক রাখতে না পারে সেজন্য নজর রাখছিলো তার পরিবার। একদিকে বাবা মায়ের চাপ অন্যদিকে বিয়ের জন্য ফাতেমার চাপ থেকে বাঁচতেই ইউনুস আলী পরিকল্পনা করে ফাতেমাকে মেরে ফেলার।

গত গত ১০ আগস্ট ইউনুস আলী পরিকল্পনা অনুযায়ী ফাতেমা বেগমকে মোবাইল ফোনে বাসা থেকে ডেকে আনে। সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে সন্ধ্যায় ইউনুসের নতুন বাড়ির পেছনে জঙ্গলের নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে ফাতেমাকে রেখে রেখে সে বাসায় চলে যায়। রাত দশটার দিকে ইউনুস আবার ওই জঙ্গলে আসে ফাতেমার সাথে দেখা করার জন্য। পরে শ্বাসরোধ করে ফাতেমাকে হত্যা করে লাশ জনৈক ডালিমের নির্মাণাধীন ঘরের বালিভর্তি ভিতের নীচে গর্ত করে চাপা দিয়ে চলে যায়।

দুইদিন পর ইউনুস আলী ডালিমের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করে তারা কেন ঘরের মেঝে পাকা করছে না। প্রয়োজনরে দ্রুত মেঝে পাকা করার জন্য যদি টাকা পয়সা প্রয়োজন হয় তার কাছ থেকে নেয়ার প্রস্তাব দেয়। মাটি চাপা দেয়ার ছয়দিন পর দুর্গন্ধ বের হলে বাড়ির লোকজন ঘরের বালু সরিয়ে লাশ দেখেতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় গোপাদলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মুক্তার হোসেন বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ২৯ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে যায়।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিবিআই আসামি সনাক্ত করেছে। সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামি ইউনুস আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামি হত্যার বর্ণনা দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। হত্যার আলামত নষ্ট করার জন্য
আসামি নিহত ফাতেমা বেগমের মোবাইল সেট, জাতীয় পরিচয়পত্র, গলার হার , কানের দুল, হাত ব্যাগ, ওড়না গোপালদী বাজারের গাজীপুরা ব্রিজ থেকে হাড়দোয়া নদীতে ফেলে দেয়।

Exit mobile version