Site icon Jamuna Television

বুয়েটের পর ঢামেকে শিক্ষার্থী নির্যাতন, ফজলে রাব্বি হলে নৃশংসতা

ঢাকা মেডিকেলের আবাসিক হলে রাতের আঁধারে ঘটে গেছে বুয়েটে আবরার ফাহাদের মতো আরেক নৃশংস ঘটনা। নির্মম নির্যাতনের পর ভাগ্যের ফেরে বেঁচে গেছেন ভুক্তভোগী ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. আলী ইমাম শীতল।

জানা গেছে, শীতল এবং নির্যাতনকারী দু’পক্ষই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর মামলা হয়, হয়েছে তদন্ত কমিটিও। কিন্তু ঘটনার ২০ দিন পরও কেউ গ্রেফতার হয়নি। প্রভোস্ট জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। এবার তারা শাস্তি চান।

ঢাকা মেডিকেলের ফজলে রাব্বী হলে অনেকটা থমথমে অবস্থা। নৃশংসতার শিকার ইন্টার্ন চিকিৎসক আলী ইমাম শীতল যে রুমে থাকতেন, সেখানে তালা ঝুলানো হয়েছে। বর্বরতার শিকার হয়ে ভয়ে আর হলে ফিরতে পারেননি তিনি।

আলী ইমাম শীতল জানান, আমার দুটি পা মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। আর আমি নিরাপত্তাহীনতার কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসে যেতে পারছি না এবং আমার হলে ঢুকতে পারছি না। কোমর থেকে পা পর্যন্ত রড দিয়ে পিটিয়ে পায়ের হাড় হাড় ভেঙে দেয়া হয়েছে। আর আমার মাথায় আঘাতের এক পর্যায়ে বমি করা শুরু করলে, পুকুরপাড় থেকে টিভি রুমে নিয়ে মারা হয় আমাকে। আমার বাম পায়ে ৩টা এবং ডান পায়ে ২টা সেলাই দেয়া হয়।

ডা. ফজলে রাব্বী হলের প্রভোস্ট ডা. হাসানুর রহমান জানান, এই রুমেই আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমরা তাদের ডাকবো এবং অবশ্যই দোষীদের শাস্তি দিবো। প্রভোস্ট আরও বলেন, ভ্যাকসিনের কার্যক্রমের কারণে তদন্তে দেরি হচ্ছে।

জানা যায়, ডা. ফজলে রাব্বি হলে ১৪ জানুয়ারি শীতলের ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার খান সহপাঠী শীতলকে ডেকে নিয়ে যান ক্যান্টিনের পুকুর পাড়ে। ইন্টার্নের দায়িত্ব নিয়ে কথা কাটাকাটির পর শুরু হয় নির্যাতন। কোমর থেকে পা পর্যন্ত রড দিয়ে পিটিয়ে ভেঙে দেয়া হয় পায়ের হাড়। মাথায় আঘাতের এক পর্যায়ে শীতল বমি করা শুরু করলে, পুকুরপাড় থেকে টিভি রুমে নিয়ে মারা হয়। ঘটনা জানলেও এ নিয়ে ভয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি হলের শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।

অভিযোগ আছে, ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে শীতলকে কোনো রকম চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় চকবাজার থানায় ইন্টার্ন চিকিৎসক শাহরিয়ার, জাকিউল ইসলাম ফুয়াদ, ফয়সাল ইরতিজাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

ঘটনায় ৩ দিন পর ১৭ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা থাকলেও সময় নিয়েছে আরও ১০ দিন। এরইমধ্যে ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজও গায়েব করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এজাহারের পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনের সাক্ষী নেয়া হয়েছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তদন্ত শেষে দ্রুত মামলার রিপোর্ট দেয়ার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ইউএইচ/

Exit mobile version