Site icon Jamuna Television

বেরোবি’র নিয়োগে নিয়মভঙ্গের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে ইউজিসির তদন্তে

রংপুর:

উপাচার্য, রেজিস্টার, পিএন্ডডি ডিরেক্টরের ক্যাম্পাসে অনুপস্থিতি, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, ডিন নিয়োগে নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে কিনা, নিয়োগ কমিটি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত কোন অনিয়ম আছে কিনা এবং যত অনিয়মের অভিযোগ এসেছে সব কিছুই খতিয়ে দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউজিসির তদন্ত কমিটি প্রধান বিশ্বজিত চন্দ।

রোববার ১০ ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার তদন্ত শেষে রাত পৌনে ১০টায় এই তথ্য জানান তিনি। । এর আগে দুপুরে পৌনে ১২ টায় তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আবু তাহের এবং ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব জামাল উদ্দিন ও শেখ আমিনুল ইসলামকে সাথে নিয়ে তিনি প্রশাসনিক ভবনের সিন্ডিকেড রুমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। পরে তিনি ডেকে ডেকে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। প্রথমেই অভিযোগকারী এবং সর্বশেষ তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের সাথে কথা বলেন ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন।

তদন্ত প্রধান বলেন, ভিসি প্রোভিসি ছাড়া, ট্রেজারার, রেজিস্টার, ভিসির পিএসসহ ভিসি কার্যালয় ও বাসভবনের কর্মকর্তা, কর্মচারী, ট্রেজারার ও রেজিস্টার দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, অভিযোগকারী শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধি এবং অভিযোগের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ এবং নথিপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গুরুত্ব পাওয়া বিষয় ছাড়াও শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং অধিকার সুরক্ষা পরিষদের করা সব অভিযোগের বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথিপত্র নিলাম। আমরা আগেও ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেছি। আজ সাক্ষ্য প্রমাণ নেয়া হলো। এসব যাচাই বাছাই করে যদি আরও ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় সেগুলো আমরা কালেক্ট করবো। এরপর এসব যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

এরই মধ্যে ২৫শে ফেব্রুয়ারি দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দ তিনটি প্রকল্পের কাজের বিষয়ে ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ’কে দায়ী করে আরেকটি তদন্ত কমিটি মতামত ও প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ভিসিসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ৪৫টি অভিযোগ এনে শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিত অভিযোগ করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ। সেই বিষয়ে গঠিত ইউজিসির তদন্ত কমিটি রোববার থেকে ক্যাম্পাসের অংশের কাজ শুরু করলো।

অন্যদিকে শনিবার নিয়োগ বিধি শর্ত ভঙ্গ করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, শিক্ষক কর্মকর্তা নিয়োগ ও পদোন্নতিতে দুর্নীতি, অনিয়ম স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলনকারী অধিকার সুরক্ষা পরিষদ ভিসির বিরুদ্ধে ৭৯০ পৃষ্ঠার ১১১টি অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করে।

তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য এবং দালিলিক প্রমাণ দিয়ে এসে পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, আমরা যে দালিলিক প্রমাণ দিয়েছি। এছাড়াও ভিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে। সে কারণে আমরা মনে করি তাকে অপসারণ করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও তার সাথে যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী জড়িত তাদেরকে চাকরীচ্যুত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে আর কেউ উচ্চ বিদ্যাপীঠকে আর এভাবে নষ্ট করতে না পারে।

তবে ভিসি ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এসব অভিযোগকে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছেন তারা হাতে গোনা ও চেনা মুখ। তারা আমার পূর্বতন ভিসি প্রফেসর ড. নুর উন নবীর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, তারা তার আত্মীয় স্বজন, গুণগ্রাহী ও তার বেনিফিসিয়ারি। তার সময়কার অনিয়ম ও দুর্নীতির ধারববাহক তারা। যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত। পুরো বিষয়টি পরিকল্পিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও দুরভীসন্ধিমুলক।। এর কোন ভিত্তি নেই।

Exit mobile version