Site icon Jamuna Television

মাদারীপুরে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে মামলা

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

মাদারীপুর সদর উপজেলার একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সেবায়েত টমেন ত্রিপুরা (২০) নামের এক সাধুর বিরুদ্ধে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের কারণে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ উত্থাপন করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। ধর্ষক টমেন ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি জেলার উপেন্দ্র ওরফে পাটানর ত্রিপুরার ছেলে এবং সদর উপজেলার ওই প্রতিষ্ঠানে সেবায়েত হিসেবে কর্মরত। এদিকে ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়ায় টমেন ত্রিপুরা গা ঢাকা দিয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, টমেন ত্রিপুরা সদর উপজেলার একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সেবায়েত হিসেবে কর্মরত। বসবাস করতেন ওই প্রতিষ্ঠানের একটি টিনের ঘরে। তার রান্না করার জন্য পার্শ্ববর্তী বাড়ির ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী নিয়োজিত ছিল। মাঝে মধ্যে ওই সাধু কিশোরীকে কু-প্রস্তাব দিতো এবং বিয়ে করার প্রলোভন দেখাতো। এতে মেয়েটি রাজি না হওয়ায় সাধু টমেন ত্রিপুরা ক্ষিপ্ত হয়। গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ওই কিশোরী তার ওখানে রান্না করতে গেলে সেবায়েত তাকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় সে ঘরের দরজা বন্ধ করে ওই কিশোরীকে আবারও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে বলে।

মেয়েটি রাজী না হওয়ায় তার মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে শাসিয়ে দেয়। মেয়েটি বেশ কিছুদিন পরে বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা ওই প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তাকে জানায়।

পরবর্তীতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে বিচার দাবি করেন। ধর্ষণের ফলে এরই মধ্যে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে বলে পারিবারিকভাবে জানানো হয়। ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে সেবায়েত টমেন ত্রিপুরা প্রতিষ্ঠান থেকে পালিয়ে যায়। কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে শুক্রবার রাতে নির্যাতিতার মা বাদি হয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদি নির্যাতিতার মা বলেন, ‘স্থানীয়রা বিচারের আশ্বাস দিলেও কোন লাভ হয়নি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা কোন বিচার না পেয়ে শুক্রবার রাতে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করেছি। মামলার পর থেকে আমাদের এলাকার প্রভাবশালীরা নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। জানিনা আমি এর বিচার পাবো কিনা। তাছাড়া ধর্ষণের ঘটনার পর আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। আমি দ্রুত ওই টমেন ত্রিপুরাকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানাই।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুর মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মাহমুদা আক্তার কণা বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা ওই কিশোরীর পাশে আছি। তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় আজ সকালে (শনিবার) এক কিশোরী এসে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করেছে।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

Exit mobile version