Site icon Jamuna Television

‘৩২১টি মসজিদে অনুদান দিয়েও হেফাজতের তাণ্ডব থেকে রক্ষা হয়নি’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাজুড়ে ৩২১টি মসজিদে অনুদান প্রদান করেও হেফাজতের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি জেলা পরিষদ। প্রায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।

রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম, এম.এসসি বলেন, ‘জেলাপরিষদ একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এ জেলা পরিষদ থেকে জেলাজুড়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ তথা রাস্তা-ঘাট, পুল, কালভার্ট, স্কুল কলেজ মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরের নির্মাণ সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজসহ বিবিধ জনকল্যাণ মূলক কাজ সম্পাদন করে থাকে।

কিন্তু ২৬ মার্চ হেফাজত ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে বিভিন্ন স্থান থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ মাদরাসার ছাত্র এবং দুষ্কৃতিকারী জেলাপরিষদের কাউতলী ডাকবাংলোর প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে আটটি সিসি ক্যামেরা, বড় আকারের ডিজিটাল এলএডি বোর্ড ভেঙে ফেলে। ডাকবাংলোর আঙ্গিনায় নির্মিত জাতীয় প্রতীক বিভিন্ন অংশ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি করে। এই অবস্থা দেখে ডাক বাংলোয় অবস্থানরত তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দারোয়ান কাম-কেয়ারটেকার কোনোরকমে আত্মরক্ষা করে এবং তৃতীয় তলার উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত একজন শ্রমিক লাফ দিয়ে পড়ে যায়। বর্তমানে সে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

বিক্ষোভকারীরা ডাকবাংলোতে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নি নির্বাপণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বার বার টেলিফোন করা হলেও বিক্ষোভকারীদের কারণে গাড়ি বের করতে না পারায় একপর্যায়ে অপারগতা প্রকাশ করে।’

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরে ২৮ মার্চ হেফাজত ইসলামের কর্মীরা অতর্কিতভাবে জেলাপরিষদের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। আঙ্গিনায় নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত করে। এমন তাণ্ডব দেখে অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে যার মতো করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। কিছু সংখ্যক কর্মচারী প্রথম এবং দ্বিতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়েছে। সেদিনও বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ করে। গ্যারেজ ভেঙে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এতে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা ও মালামাল সংস্কার করতে আনুমানিক ২ কোটি ৮ লাখ ২০হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। ডাকবাংলোসহ জেলা পরিষদের সর্বমোট আনুমানিক ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ ৫ কোটি টাকা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, সচিব মেহের নিগার ও প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version