Site icon Jamuna Television

রাস্তা বন্ধ করে প্রাচীর নির্মাণ: অবরুদ্ধ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:

রংপুরের মিঠাপুকুরের লতিবপুরের হাতিমপুরে প্রতিবেশী কর্তৃক দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে প্রাচীর নির্মাণ করায় গত ১৩ দিন ধরে অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে একটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার।

বিষয়টি জানিয়ে তিনি ইউএনও ও ভূমি অফিসে লিখিত আবেদন করেও মেলেনি সুরাহা। ফলে অসহায় বন্দি অবস্থায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন পরিবারের ৪ সদস্য।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেয়া লিখিত অভিযোগ এবং সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার হাতিমপুর গ্রামে বংশপরস্পরায় সুদীর্ঘ শত বছর ধরে বসবাস করে আসছেন মৃত সুখদেব রবিদাশের পুত্র রামদেব রবিদাশ। তার বাড়ি থেকে রেকর্ডিয় রাস্তায় ওঠার জন্য পাশের বাড়ির বিদেশী মোহরার হারাধন নামের এক ব্যক্তির সাথে সমঝোতার ভিত্তিতেই বংশপরস্পরায় থাকা একটি রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করছিলেন দুই পরিবার।

গত ২৯ এপ্রিল বিদেশী হারাধন হঠাৎ ওই রাস্তার ওপর প্রাচীর নির্মাণ শুরু করে। বিষয়টি জানিয়ে সাথে সাথেই রামদেব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেন।

আবেদন পাওয়ার পরপরই উপজেলা সহকমিশনার (ভূমি) নুরে আলম সিদ্দিকী রানা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসার মোজাহিদ হুসাইন সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু তারা সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর ওই দিনই স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে পুরো প্রাচীর নির্মাণ করে হারাধান। একারণে পরিবার পরিজন নিয়ে অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে রামদেব। বিকল্প কোনো রাস্তা সুযোগ না থাকায় তারা বন্দি জীবন যাপন করছেন।

এ ব্যাপারে রামদেব জানান, বংশপরস্পরায় একশ বছর থেকে দানকৃত সম্পত্তি (দাগ-নং ১৭৪) এর মধ্যে আমি এবং বিদেশী হারাধনের পরিবার বসবাস করছি। আমাদের দুই পরিবারের সীমানার মাঝ দিয়ে থাকা রাস্তার মাধ্যমে আমরা যাতায়াত করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করেই হারাধন চলাচলের রাস্তায় প্রাচীর নির্মাণ করায় আমি পরিবার পরিজন নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। সাথে সাথে বিষয়টি আমি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি দুইজন অফিসার পাঠান। তারা কাজ বন্ধ করে দেয়ার কথা বলে চলে যাওয়ার পর বিদেশী হারাধন পুরো প্রাচীর নির্মাণ করেন রাস্তা বন্ধ করে দেন। এখন আমি আমার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বন্দি হয়ে আছি। কোথাও বের হতে পারছি না। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। চলাচলের রাস্তা দেয়া না হলে আমাকে পরিবার পরিজন নিয়ে বন্দি অবস্থাতেই মরে যেতে হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বিদেশী হারাধন বলেন, ক্রয়সূত্রে আমি ওই জমির মালিক। সেকারণে আমি প্রাচীর নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি।

তবে এ ব্যাপারে লতিফপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোজাহিদ হোসাইন জানান, যে জমির চলাচলের রাস্তায় বিদেশী হারাধন প্রাচীর নির্মান করেছেন সেটি তার ক্রয়কৃত জমি নয়। তার ক্রয়কৃত জমির দাগ নম্বর ১৪৯। আর উনি যে জায়গায় প্রাচীর দিয়েছেন সেই জমির দাগ ১৭৪। তদন্ত সম্পন্ন করেছি। আমি তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও অফিসে জমা দিয়েছি। তবে অমানবিকভাবেই রামদেবের চলাচলের রাস্তায় প্রাচীর নির্মান করে তাকে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ ব্যপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরে আলম সিদ্দিকী রানা জানান, আমার হাতে এখনও তদন্ত প্রতিবেদন আসেনি। আসমাত্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Exit mobile version