Site icon Jamuna Television

দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় এক বছরে সাড়ে ৭ লাখ মানুষের মৃত্যু: গবেষণা

দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় এক বছরে সাড়ে ৭ লাখ মানুষের মৃত্যু: গবেষণা

দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় বাড়ছে মানুষের মৃত্যুঝুঁকি। কর্মক্ষেত্রে বেশি সময় থাকা ও কাজের চাপের কারণে স্ট্রোক ও হৃদযন্ত্রের অসুস্থতা বাড়ছে। কেবল এক বছরেই, বিশ্বে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে দীর্ঘ কর্মঘণ্টার প্রভাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। বলা হয়েছে, করোনা মহামারিতে এই ঝুঁকি আরও কয়েকগুণ বেড়েছে।

কাজ যেন শেষই হয় না। বাড়িতে ফিরেও তাই নজর ল্যাপটপে। গতির এ দুনিয়ায় টিকে থাকতে কর্মঘণ্টার সাথে আপস করতে হয় অনেককেই। সারা বিশ্বেই অফিস-আদালতে দৈনিক কর্মসময় ৮ ঘণ্টা। তবে অনেকক্ষেত্রেই আরও বেশি সময় কাজ করতে হয় কর্মীদের। যার বিরূপ প্রভাব পড়ে স্বাস্থ্যে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আইএলও এর যৌথ এক গবেষণায় দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা চালিয়ে যাওয়ায় মানুষের হৃদরোগ, স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়। দীর্ঘ কর্মঘণ্টাজনিত অসুস্থতায় কেবল ২০১৬ সালেই বিশ্বব্যাপী মৃত্যু হয়েছে ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিবেশ বিষয়ক কর্মকর্তা ফ্র্যাংক পেগা জানান, বিশ্বে প্রতি ১০ জনে একজন নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত কাজ করে। সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তারও বেশি। ২০০০-২০১৬ সালের মধ্যকার সময়ে মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি এবং নানা ধরনের রোগ পর্যবেক্ষণ করেছি। দেখা গেছে, এই ১৬ বছরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের হার ৪২ শতাংশ বেড়েছে।

গবেষণা বলছে, যারা সপ্তাহে ৩৫-৪০ ঘণ্টা করে, তাদের তুলনায় ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করা কর্মীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ বেশি। হার্টের সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি ১৭ শতাংশ।

অধ্যাপক জিয়ান লি জানান, ২২টি সমন্বিত গবেষণায় প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যারা সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করে দশ বছর পর তাদের হৃদরোগ ও স্ট্রোকে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়।

কোভিড-১৯ মহামারিকালে দীর্ঘ কর্মঘণ্টাজনিত মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ফ্র্যাংক পেগা আরও বলেন, কিছু কিছু জায়গায় এই মহামারিকালে লকডাউনের সময়ে মানুষের কর্মঘণ্টা ১০ শতাংশ বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার ফলে মালিকপক্ষ হয়ত লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু এই মহামারিকালে কাজের সময় বাড়িয়ে দেয়াটা মোটেই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা মানুষের শরীরকে আক্রান্ত করে ধীরে ধীরে। এর ফলে কয়েক দশক পর পড়ে প্রভাব।

এনএনআর/

Exit mobile version