Site icon Jamuna Television

শুকিয়ে যাচ্ছে হিমালয়ের লাখো ঝর্ণা, প্রভাব পড়বে পদ্মা-যমুনায়

হিমালয় থেকে প্রবাহিত লাখো ঝর্ণার পানির ওপর এই অঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভরশীল। কিন্তু সম্প্রতি ভারত সরকারের প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ওইসব ঝর্ণা ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে।

‘নীতি আয়োগ’ (National Institution for Transforming India) হচ্ছে ভারত সরকার পরিচালিত একটি থিংকট্যাংক সংস্থা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাষ্ট্রকে পরামর্শ ও তথ্য প্রদান করা এটির কাজ।

গত সপ্তাহে সংস্থাটির প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, হিমালয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ ঝর্ণা এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। এগুলোকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, সে ব্যাপারে আগামী সোমবারের (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত দিতে বলা হয়েছে।

রিপোর্ট মতে, হিমালয়ের নিকটবর্তী অঞ্চল ভারতের উত্তরখণ্ডের বেশিরভাগ গ্রামীণ এলাকার মানুষ সরাসরি হিমালয়ের ঝর্ণার পানির উপর নির্ভরশীল। আর নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মেঘালয়ের প্রায় সব গ্রামীণ এলাকার মানুষ ঝর্ণার পানি ব্যবহার করে থাকেন। দেশটির হিমালয়-ঘেঁষা ১২টি রাজ্যের অন্তত ৫ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে ঝর্ণার পানির ওপর নির্ভরশীল বলে নীতি-আয়োগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ভারতজুড়ে এ ধরনের ঝর্ণার সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। এর মধ্যে হিমালয়ের পাদদেশে থাকা রাজ্যগুলোতেই রয়েছে ৩০ লাখ, যার অর্ধেকের বেশি গত কয়েক দশকে শুকিয়ে গেছে, বা যাচ্ছে।

হিমালয় থেকে প্রবাহিত শুকিয়ে যাওয়া একটি ঝর্ণা

বিশাল সংখ্যক ঝর্ণা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ৩ টি নদী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- বহ্মপুত্র, গঙ্গা ও সিন্ধু। ভারতের ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশে যমুনা নদীর সাথে মিলেছে এবং গঙ্গা মিলেছে পদ্মার সাথে।

এই তিনটি নদীর পানির প্রধান উৎস হিমলায়ের হাজার হাজার ঝর্ণা। সেগুলো শুকিয়ে যাওয়ার কারণে নদীগুলোতে স্রোত কমে আসবে, এবং এর সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের নদীগুলোতেও পড়বে।

‘শুকনা মৌসুমে এই অঞ্চলের লাখো গ্রামে পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। খাবার কিম্বা ঘরোয়া কাজের ব্যবহার করার মতো পানি পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে’, বলা হয়েছে রিপোর্টে।

এতে আরও বলা হয়, ‘সময় এসেছে এই সমস্যাকে ভারতের জাতীয় সংকট হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে সমাধানের জন্য চেষ্টা করার।’ সংকট মোকাবেলায় আগামী আট বছর ধরে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং ক্ষুদ্রমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে নীতি আয়োগ।

Exit mobile version