Site icon Jamuna Television

ফিলিস্তিনি তরুণীকে গুলি করার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ; ইসরায়েলি পুলিশ সদস্য বহিষ্কার

পূর্ব জেরুজালেমে নিজ ঘরের দরজায় এক নিরস্ত্র কিশোরীকে গুলির ঘটনায় আবারও আলোচনায় ইসরায়েলের আগ্রাসন। গেল সপ্তাহে বিনা উস্কানিতে ১৬ বছরের কিশোরীকে গুলি করে পুলিশ। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের পর নিন্দার ঝড় উঠেছে খোদ ইসরায়েলি গণমাধ্যমেই। চাপের মুখে এক পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বহিস্কার করতে বাধ্য হয়েছে তেলআবিব। বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনিদের জীবনকে কতোটা তুচ্ছ মনে করে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী, তার আরও একটি প্রমাণ হয়ে থাকবে এই সিসিটিভি ফুটেজ।

গেল ১৮ মে, পূর্ব জেরুজালেমে, নিজেদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ভুক্তভোগী ফিলিস্তিনি পরিবার। ইসরায়েলি পুলিশ তাদের নির্দেশ দেয় ঘরে ঢোকার। ফিলিস্তিনি পরিবারটি সে নির্দেশনা মানলেও পেছন থেকে গুলি ছোড়ে পুলিশ। পিঠে গুলি লেগে ঘরের ভেতরেই লুটিয়ে পড়েন ১৬ বছর বয়সী কিশোরী জানা কিসওয়ানি।

জানা কিসওয়ানি জানান, তিনি পরিবারসহ ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং নিরাপত্তা বাহিনী ছিল মাত্র কয়েক ফুট দূরত্বে। ঘরে ঢুকতে বললে তারা একে একে সবাই ঢুকে যাচ্ছিল। তিনি ছিলেন সবার পেছনে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার পিঠে গুলি করা হয়। তারপর গুলি করা হয় তার বাবাকেও। তার পায়ে গুলি লাগে। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী ঘরের ভেতরে গ্রেনেড চার্জ করে।

প্রতিবেশীরা এ দৃশ্য গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করেন যেখানে দেখা যায় জানার বাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে।

জানা কিসওয়ানি জানান যে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে। ফুসফুসও ক্ষতিগ্রস্ত। এখন অন্য কারো সহায়তা ছাড়া তিনি নড়তে পারেন না। তিনি জানতে চান নিজের ঘরেও নিরাপত্তা না থাকলে তারা কোথায় যাবেন। আতঙ্কে তারা কেউ কয়েক রাত ধরে ঘুমাতে পারছেন না।

জানাদের বাড়ি যে এলাকায়, সেই শেখ জাররা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিয়েই উত্তেজনা চলছে পশ্চিম তীরে। আতঙ্কিত পরিবারটির ধারণা মূলত ভয় দেখাতেই বিনা কারণে এ গুলি।

ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকার ফিলিস্তিনি অধিবাসী মোহাম্মদ কিসওয়ানি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী যেটা করলো তা অবিশ্বাস্য। এমনকি দখলদার সেনাবাহিনীর কাছ থেকেও এমন আচরণ বিশ্বাস করতে পারছি না। আসলে এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোই তাদের উদ্দেশ্য। যাতে আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাই।

নিরস্ত্র, নিরপরাধ কিশোরীকে গুলির এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে ইসরায়েলের গণমাধ্যমেও। প্রভাবশালী হারেৎজ পত্রিকায় প্রতিবেদনের পর গত বুধবার (২৬ মে) গুলি চালানো পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। ৫ জনের বিরুদ্ধে চলছে তদন্ত।

Exit mobile version