Site icon Jamuna Television

গোপন ভিডিও ও ত্রিভুজ প্রেমের কারণেই ইমন হত্যাকাণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর:

মাদারীপুরের শিবচরের ইসমাইল হোসেন ইমন হত্যা ও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে গা শিউরে উঠার মতো কৌশল প্রেমিকা লাবনী চৌধুরী অবলম্বন করেছে বলে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কোল্ড ড্রিংকসে নেশাদ্রব্য খাইয়ে নদীর পাড়ে নিয়ে প্রায় অচেতন করে ইমনের গলায় প্রথম ছুড়ি চালায় প্রেমিকা লাবনী। পরে গলায় আরও দু’দফা ছুড়ি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে নতুন প্রেমিক কামরুজ্জামান কামরুল। পরে লাশ ফেলে দেয়া হয় আড়িয়াল খাঁ নদে।

ঈদের দিন দেখা করার কথা বলে ডেকে আনা হয় ইমনকে। এ সময় ইমনের সাথে থাকা জামাল নামের অপর একজনকেও নেশাদ্রব্য খাওয়ালে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে ইমনকে গল্প করার কথা বলে নির্জন চরে নিয়ে যায়
লাবনী। মূলত অন্তরঙ্গ ভিডিও ফেরত না দেয়ায় লাবনী নতুন প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে এই চরম পন্থা নেয় বলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের চোখ আড়াল করতে লাবনী অভিনব সব কৌশল অবলম্বন করে। এদিকে এ হত্যাকাণ্ডে লাবনীর সহযোগী মেহেদীকে ২ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ, পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মে মাদারীপুরের শিবচরের চর বাঁচামারা গ্রামের আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয় ইসমাইল হোসেন ইমনের। ইমন উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরকামার কান্দি গ্রামের সেকান কাজীর ছেলে। ঈদের দিন শুক্রবার দুপুরে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল । পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা করলে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলার গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশের একাধিক টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত মঙ্গলবার প্রেমিকা লাবনী আক্তার ও তার সহযোগী মেহেদী ফরাজীকে গ্রেফতার করে।

শিবচরের দত্তপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ সঞ্জয় কুমার ঘোষ উপরে উল্লেখিত তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে লাবনী আক্তার হত্যার দায় স্বীকার করে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। লাবনীর সহযোগী মেহেদীর ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের একের পর এক মোটিভ বের হয়ে আসছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

মাদারীপুর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আল মামুন জানান, এ হত্যাকাণ্ডে ৪ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। মোবাইলে গোপন ভিডিও ও ত্রিভুজ প্রেমের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে লাবনী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সাবেক প্রেমিকের গলায় লাবনীই প্রথম ছুড়ি চালায়। হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে লাবনী যে সকল কৌশল অবলম্বন করেছে তা সত্যি অভিনব।

Exit mobile version