Site icon Jamuna Television

সংসার-পদ সব কেড়ে নিলো ফেসবুক, ‘নিঃস্ব’ যুবলীগ নেতা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

স্থানীয় এমপির ওপর ক্ষোভ থেকে রাস্তায় অস্ত্র হাতে বের হয়ে তাকে খুঁজছিলেন উপজেলার যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আবু ওবাইদা শাফি। কুষ্টিয়ার খোকসার সেই ঘটনা ফেসবুকে লাইভ প্রচার হওয়ার জেরে কয়েকদিনের মধ্যেই দলীয় পদ হারাতে হয়েছিল শাফিকে। মূলত ফেসবুকের সেই দৃশ্য ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় ক্ষমতাসীন দল ও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় যেতে হয়েছে জেলেও। এসব ঘটনা বছর দেড়েক আগের।

সম্প্রতি শাফির জীবন আবারও শনি হয়ে দেখা দেয় ফেসবুক। জেলে থাকাবস্থায় তার স্ত্রী লিমার সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল একই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সায়েম হোসেন সুজনের। এক পর্যায়ে তা পরকীয়ায় গড়ায়। সেই সময় সুজনের সাথে লিমার কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি সম্প্রতি ফাঁস হয় ফেসবুকে। আবারও ভাইরাল। এবং এর ফল স্বরূপ ভেঙে গেছে শাফির সংসার। তালাক দিয়েছেন স্ত্রীকে।

দু’টি ঘটনাতেই ফেসবুকে ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হওয়ায় আইনি ও সামাজিক চাপের মুখে পড়তে হয় শাফিকে। বলতে গেলে, ফেসবুক তার সংসার ও রাজৈনিতক ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে।

শাফি নিজেও একই কথা বললেন। তার ভাষ্য- ‘ফেসবুকে বিভিন্ন ঘটনা ভাইরাল হওয়ার কারণে আমি আজ নিঃস্ব। সংসার, মান-সম্মান, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সব হারিয়েছি। সুজন আর লিমা যা খুশি করুক, আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।’

শাফি-লিমার ১২ বছরের সংসারে লাব্বিব মাহমুদ লিপু (১০) নামের একটি ছেলে রয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের জানুয়ারিতে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি থেকে বাদ পড়েন নেতা শাফি। এর জেরে গত বছরের ২৩ জানুয়ারি রাত বারটার দিকে নিজের সর্মথকদের নিয়ে দেশিয় অস্ত্র হাতে খোকসা বাজারে স্থানীয় এমপিকে মারধর করার জন্য অবস্থান নেন। এবং ঘটনাস্থল থেকে তা ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করেন।

ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। এরপর শাফিসহ অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামি করে করে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে খোকসা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এমপির অনুসারীরা। পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে জেল হাজতে পাঠায়। আর এই সুযোগে তার স্ত্রী লিমার সঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সায়েম হোসেন সুজনের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

সুজন ও লিমার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর শাফি লিমাকে তালাক দেন। লিমা তখন ঢাকার কেরানীগঞ্জে বাবার বাড়িতে চলে যান। একই সাথে সুজনকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু সুজন রাজি না হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যায় লিমা খোকসা উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় সুজনের বাড়িতে হাজির হন।

এদিকে লিমা বাড়ি আসতে পারে এমনটা টের পেয়ে সুজনের পরিবারের সদস্যরা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। অবশ্য তালা ভেঙেই ঘরে অবস্থান নিয়েছেন লিমা। তিনি বলেন, আমার সংসার ভাঙার পর এখন সুজন বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে এখানে আসতে হয়েছে।

Exit mobile version