Site icon Jamuna Television

হুমকিতে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ

গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রভাবে মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। সম্প্রতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে অত্যধিক বিপদাপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছে ইউনেস্কো।

মঙ্গলবার (২২ জুন) বিবিসির এক প্রতিবেদনে উপরোক্ত তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আগামী জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির বৈঠকের জন্য এই সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ মেনে নেওয়া হলে এই প্রথম কোনো প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যকে মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বিপদাপন্ন এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

ইউনেস্কো জানিয়েছে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রভাব থেকে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে অক্ষত রাখতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়নি অস্ট্রেলিয়া সরকার। রিফ সংলগ্ন সমূদ্রের পানির মান উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ এখন পর্যন্ত পূরণ করা হয়নি। প্রাকৃতিক এই প্রবাল প্রাচীরকে রক্ষা করতে অতি সত্বর রিফ সংলগ্ন অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমনের পদক্ষেপ নিতে হবে দেশটির সরকারকে। ইতোমধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ইউনেস্কো।

এদিকে ইউনেস্কোর এমন সুপারিশের কঠোর সমালোচনা করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। যদিও দেশটির প্রশাসন রিফ সংলগ্ন এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ৩০০ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও, গত ৫ বছর ধরে রিফের জন্য ক্ষতিকর কার্যক্রম বন্ধ করেনি তারা। অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশমন্ত্রী সুজান লি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের সব রিফের বাস্তুসংস্থানের জন্যই সমান পরিমাণ বিপদজনক। বিশ্বের ৮৩টি ঐতিহ্যবাহী স্থানের অস্তিত্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে। তাই এক্ষেত্রে শুধু অস্ট্রেলিয়ার ওপর দোষ চাপানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালপ্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, যা অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড উপকূল ঘেঁষে কোরাল সাগরে অবস্থিত। বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক গুরুত্বের কারণে ১৯৮১ সালে স্থানটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। এর আগে ২০১৭ সালে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ এর অস্তিত্ব সংকটজনক বলে প্রথম অভিযোগ তুলেছিলো ইউনেস্কো।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ক্ষতির প্রধান কারণ সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এদিকে অস্ট্রেলিয়া সরকার এ ক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ নিতে তেমন আগ্রহী নয়। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার বৈশ্বিক পরিকল্পনায় যোগ দিতে আগ্রহী নয় অস্ট্রেলিয়া। ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পর কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা হালনাগাদও করেনি দেশটি। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কয়লা ও গ্যাস রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া শীর্ষস্থানীয়।

Exit mobile version