Site icon Jamuna Television

বুলডোজারে সমান করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের পোড়া গ্রামগুলো

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামগুলোতে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর চালানো ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন বুলডোজার চালিয়ে মুছে দেওয়া হচ্ছে।

স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করে এমনটি জানিয়েছে হিউম্যান রাইট ওয়াচ গ্রুপ। তারা জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫৫টি গ্রাম বুলডোজার দিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হিউম্যান রাইট ওয়াচ গ্রুপ আরও বলছে, অপরাধের চিহ্ন হিসেবে ওই গ্রামগুলো সংরক্ষণ করা উচিত ছিল। এগুলো শরণার্থী রোহিঙ্গাদের আইনী দাবির চাক্ষুষ প্রমাণ।

এদিকে প্রমাণ ধ্বংসের এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার প্রধান ও দেশটির সমাজকল্যাণমন্ত্রী উইন মায়াট আয়। তার দাবি, আগের তুলনায় ভালো মানের গ্রাম তৈরির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

একবিংশ শতকে সংঘটিত এ যাবৎকালের ভয়াবহ এই নিপীড়নকে জাতিসংঘ ‘টেক্সটবুক এক্সাম্পল অব এথনিক ক্লিনজিং’ বা ‘জাতিগত নির্মূলের যথার্থ উদাহরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

‘জাতিগত নির্মূলের যথার্থ উদাহরণ’-এর এই ঘটনায় হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে, এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের ঘর-বাড়ি। ওই এলাকাগুলো পরিদর্শনে জাতিসংঘের কর্মীদেরও প্রবেশ করতে দেয়নি মিয়ানমার।

হিউম্যান রাইট ওয়াচ গ্রুপের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, “ওই গ্রামগুলো রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নির্যাতনের প্রমাণ ছিল, এবং সেগুলো সংরক্ষণ করা উচিত। যাতে জাতিসংঘ নিযুক্ত বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করতে পারে।”

তিনি বলেন, “বুলডোজার চালানোর ফলে ওই এলাকাগুলোতে রোহিঙ্গাদের আইনী ভিত্তি মুছে দেবে, এবং সেই সাথে তাদের স্মৃতিও।”

তবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বসবাসের চিহ্ন মুছে ফেলার পাশাপাশি তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মুছে দেওয়ার পদ্ধতিগত বিভিন্ন চেষ্টা নতুন কিছু নয়। এই ধরনের অভিযোগ ২০১৭ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাও করেছিল।

দশকে পর দশক ধরে রোহিঙ্গাদের জাতিগত স্বীকৃতি দিচ্ছে না মিয়ানমার। এমনকি নির্দিষ্ট এলাকা বাইরে যাতায়াতেও রয়েছে এক ধরনের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা।

যমুনা অনলাইন: এফএইচ

Exit mobile version