Site icon Jamuna Television

সন্ত্রাস রোধে মালিতে জীবন বাজি রাখছেন বাংলার সেনারা

‘হঠাৎ একটা আইডি ব্লাস্ট হলো। আমার পাশে আমার যে গাড়িচালক ছিল ওর পায়ে দেখলাম অনেকখানি আঘাত পেয়েছে। আমার গাড়ির সামনের কাঁচ ওর রক্তে ভিজে গেল। আমি নিজের কোমরের নিচে, পায়ে হাত দিলাম। আমি ঠিক আছি কি না দেখতে। দেখলাম আমি ঠিক আছি।’ কথাগুলো বলছিলেন মালিতে জাতিসংঘ মিশনে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সন্ত্রাসবিরোধী অপারেশন মঙ্গুজের ডমিনেশন ভেহিকল কমান্ডার মেজর রাজিব।

সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত ও পার্শ্ববর্তী সেক্টরকে সহায়তা প্রদানে এ বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অপারেশন মঙ্গুজ পরিচালনা করে। তাদের এই অপারেশনের সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হলেও অপারেশনের সময় আইডি বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন ৩ সেনাসদস্য।

জাতিসংঘ মিশনে কাজ করা সেনার বলছেন, প্রতিটি অপারেশনে এভাবেই ওঁত পেতে থাকে মৃত্যু। পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতায় সেসব বাধা পেরিয়ে বিজয়ীর বেশে ফেরেন বাংলার সেনা সদস্যরা। সন্ত্রাস রোধে জীবন বাজি রেখে অবদান রাখছেন বিশ্ব শান্তি রক্ষায়। আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়ে লাল সবুজের বাংলাদেশকে করছেন গৌরাবান্বিত।

মালির এমনই এক সংঘাতময় অঞ্চল গাও। এ অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিবা-রাত্রির টহল বা অরুনিয়া পেট্রোল-গাও পরিচালনা করে সেনারা। দিন কিংবা রাত যেকোনো সময়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে সেনা সদস্যদের থাকতে হয় সদা সতর্ক।

নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লড়াই, পুরনো জাতিগত বিভেদ, অর্থনৈতিক মন্দা আর রক্ষিত খনিজ সম্পদের দিকে বিদেশিদের লোলুপ দৃষ্টির কারণে মালিতে সন্ত্রাসবাদ চরম আকার ধারণ করেছে। সেখানে আতঙ্ক ছড়ায় জেনিম, আনছার আল দ্বীন, আল-মৌরবিতান, আনসার উল ইসলাম, মাসিনা কাতাবা ও আইএসজিএস’র মত বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।

মালির সীমান্ত এলাকায় ব্যানইঞ্জিনিয়ার-৭ মিনুসমার অপারেশন্স অফিসার মেজর সাকিব জানান, গভীর রাতেও চেকপোস্টগুলোতে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হয়। একটি একটি বিপজ্জনক এলাকা। নাইট ভিশন গগলসসহ নানা প্রযুক্তির সহায়তায় আমরা সতর্ক অবস্থানে থাকি। যখনই কোনো শত্রুর উপস্থিতি দেখা যাবে তখনি সেনারা গুলি চালাবে।

এভাবেই শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অকুতোভয় সেনা সদস্যরা।

Exit mobile version