Site icon Jamuna Television

ভারতে মুসলিম নারীদের নিলামে তোলার ঘটনায় তোলপাড়

ভারতে পেশাদার পাইলট হানা খান। তাকেও নিলামে তোলা হয়। ছবি: সংগৃহীত।

ভারতে গত রোববার অনেক মুসলিম নারী হঠা‌‌ৎ দেখতে পান‍ অনলাইনে বিক্রির জন্য তাদের নিলামে তোলা হয়েছে। এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে ভারতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুসলিম নারীদের ছবি নিয়ে তা প্রকাশ করে ‘সাল্লি ডিলস’ নামের একটি অ্যাপ। ‘সাল্লি’ একটি অবমাননাকর শব্দ। ভারতে উগ্র হিন্দুরা মুসলিম নারীদের অবমাননা করতে ‘সাল্লি’ শব্দটি ব্যবহার করে।

সেখানে বলা হয়, এসব নারীদের বিক্রি করা হবে। অ্যাপটিতে ৮০ জনের বেশি নারীর ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যারা বিমান চালনা, আইন পেশা এবং সাংবাদিকতার মতো বিভিন্ন পেশায় সফল। পাশাপাশি সক্রিয় ও সোচ্চার বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে।

ভারতের পেশাদার পাইলট হানা মহসিন খান। সম্প্রতি এক ওয়েবসাইটে নিজের ছবি দেখতে পান, যেখানে বিক্রির জন্য তাকে রীতিমতো নিলামে তোলা হয়েছে। সাল্লি ডিলস নামের একটি অ্যাপে হানা খানের মতো আরও অনেক মুসলিম নারীর ছবি প্রকাশ করা হয়। যেখানে লেখা রয়েছে ‘আজ বিক্রির জন্য’।

হয়রানির শিকার ভারতীয় মুসলিম নারী পেশায় পাইলট হানা মহসিন খান বলেন, অ্যাপে ঢুকে কিছুক্ষণ পরই নিজের ছবি দেখতে পাই। ওরা ছবি নিয়েছে আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে, ছবির সাথে আমার টুইটারের ইউজার নেইম ছিলো। এটা ২০ দিন ধরে অনলাইনে ছিল, কিন্তু আমরা তা জানতেই পারিনি। এমন ৮৩টি ছবি ছিলো। পুরো বিষয়টি দেখে ভয়ে আমি রীতিমতো ঠাণ্ডা হয়ে যাই।

ভারতে নারীদের নিলামের এমন ঘটনা নিয়ে চলছে তোলপাড়। বিবিসি জানিয়েছে, মূলত উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিম নারীদের অবমাননা করতেই সাল্লি শব্দটি ব্যবহার করে। ওই অ্যাপ থেকে কোনো নারীর নিলাম হয়নি, অ্যাপটি খোলার আসল উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম নারীদের অপমান-অপদস্থ করা। ভারতে যেসব মুসলিম নারী পেশার ক্ষেত্রে সফল এবং বিভিন্ন ইস্যুতে সোচ্চার তাদেরকেই নিশানা করা হয়েছে।

হানা মহসিন খান আরও বলেন, আমি একজন মুসলিম নারী, সফল এবং বিভিন্ন ইস্যুতে সোচ্চার। তাই তারা আমার মুখ বন্ধ করতে চায়, অপদস্থ করে ভয় দেখাতে চায়। তবে আমি ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাওয়ার মানুষ নই। পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছি। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের শেষ দেখে ছাড়বো।

জানা গেছে, জিটহ্যাব নামে একটি ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে ওই অ্যাপটি কার্যকর করা হয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, ভারতে নাগরিকত্ব আইন এবং তালিকার বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনে বেশ সোচ্চার ছিলেন দেশটির মুসলিম নারীরা। এসব কারণেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছেন তারা। এরই মাঝে, মানবাধিকার কর্মীরা সরব হয়েছেন বিষয়টি নিয়ে। অ্যাপ তৈরির পেছনে কারা রয়েছে তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Exit mobile version