Site icon Jamuna Television

কখনো পেনাল্টি না নেওয়া কিশোরের পায়েই কেন বাজি ধরেছিলেন সাউথগেট?

পেনাল্টি মিস করে শিরোপা হারানোর পর এভাবেই বুকোয়া সাকাকে আগলে নেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট।

ইউরোর ফাইনালের ওঠার পর থেকেই ‘ইটস কামিং হোম’ কলরবে মেতে ওঠা বেকহাম, টম ক্রুজ আর রাজ পরিবারের সদস্যদের মতো গোটা ব্রিটিশ জাতির স্বপ্ন এক কিশোরের হাতে তুলে দিয়েছিলেন গ্যারেথ সাউথগেট। ১৯৯৬ এর ইউরোতে যে ইতালির বিপক্ষে ট্রাইবেকারে শট মিস করে শিরোপা হারিয়েছিলেন, সেই শিরোপা ঘরে ফেরানোর স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিলেন ১৯ বছরের বুকোয়া সাকার পায়ে। এর আগে কোনোবারই সিনিয়র লেভেলে পেনাল্টি না নেওয়া সাকা পারেননি, ব্রিটিশদের স্বপ্ন চুরমার করে ইউরোর শিরোপা গেছে রোমে।

১২০ মিনিটের মহারণ শেষে ট্রাইব্রেকারের পঞ্চম শটটি নিতে আসা জর্জিনিওর শট ঠেকিয়ে পিকফোর্ড জাগিয়ে তুলেছিলেন পুরো ওয়েম্বলিকে। কিন্তু ইংল্যান্ডের ৫ম শট নিতে এসে ১৯ বছর বয়সী বুকায়ো সাকা আটকে যান ডোনারুমার অনুমান আর রিফ্লেক্সের নৈপুণ্যে। এই শটের মাধ্যমেই নির্ধারিত হয়ে যায়, ব্রিটিশদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না এবারও। কিন্তু সাকাকেই কেন বেছে নিয়েছিলেন গ্যারেথ সাউথগেট, সেটিই এখন বড় ধাঁধা।

শেষ শট। বল জালে জড়ালে সমতায় ফিরবে পিছিয়ে পড়া ইংলিশরা। গোলপোস্টের নিচে ছয় ফুট চার ইঞ্চির জিয়ানলুইগি ডোনারুম্মা। ইংলিশ দলে অভিজ্ঞ অনেককে রেখে সাউথগেট দায়িত্ব তুলে দিলেন সিনিয়র লেভেলের ফুটবলে কখনো পেনাল্টি না নেওয়া সাকার কাঁধে।

ইউরোর শুরু থেকেই হিসেব কষে কষে এমন বাজির পর বাজি ধরে ইংলিশদের ফাইনালে তুলেছেন সাউথগেট। ছেলেদের কখনো খেলিয়েছেন ৪-৩-৩ এ আবার কখনো ৩-৪-৩ ফর্মেশনে। চেক প্রজাতন্ত্রের খেলার দিন থেকেই সাকার ওপর স্পষ্ট একটা বিশ্বাস রেখেছিলেন ইংলিশ বস। কিন্তু শেষ পেনাল্টি নেওয়ার মত এতো বড় চাপ সামলাতে কি প্রস্তুত ছিলেন এই কিশোর, ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলোতে চলছে এই আলোচনা।

ইউরোর ইংলিশ দৃশ্যপটে যে রাশফোর্ড ছিলেন একরকম অতিথি শিল্পীর মতো তাকেই সাউথগেট ১১৯ মিনিটে ডেকে আনলেন সবচেয়ে দামী দৃশ্যে পারফর্ম করতে। কিন্তু ফ্লপ রাশফোর্ড। ম্যানচেস্টার ইউনাইটে রাশফোর্ডের আরেক সহযোদ্ধা স্যানচোকেও ডেকে এনেছিলেন সাউথগেট। তিনিও হতাশ করেছেন। এরপর সিনেমার একেবারে শেষ দৃশ্যে স্টারলিং, স্টোনসদের মতো নায়কদের রেখে নবাগত সাকাকে সামনে এনে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়লেন তিনি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো বলছে, সাউথগেট নিয়মিত খেলোয়াড়দের দিয়েই শট নেয়াতে পারতেন। পেনাল্টি অনুশীলনে নিয়মিত গোল করাদের পায়ে বল তুলে দিলে হয়তো কাপ ফিরতো ফুটবলের দেশে। আবার কেউ কেউ সাউথগেটের এই বাজিকে ফেয়ারই ধরে নিচ্ছেন. বলছেন, রাশফোর্ড-স্যানচোর মতো অভিজ্ঞরা যেখানে মিস করেছেন সেখানে ভাগ্য পাল্টাতে সাউথগেট নতুন কারো পায়ে বাজি ধরবেন এটিই স্বাভাবিক।

কিশোর সাকা সবার আশার দাম দিতে না পারলেও ইংলিশ দলের সিনিয়রেরা কেউ দোষ দেননি তাকে। বলেছেন, এটি আমাদের ভাগ্যে ছিলো। ম্যাচের পর সাকাকে জড়িয়ে থাকা সাউথগেটের ছবিটা বলে দিয়েছে কোচ কতোটা আগলে নিয়েছেন এই কিশোরকে। কেইন, ম্যাগুয়াররা সাহস দিয়ে বলেছেন, তোমার পায়েই আমাদের শিরোপা ঘরে ফিরবে।

Exit mobile version