Site icon Jamuna Television

চীনে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের নামে উইঘুর বন্দীশালা চালানোর অভিযোগ

চীনে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের নামে উইঘুর বন্দীশালা চালানোর অভিযোগ।

চীনের জিনজিয়াংয়ে বিশাল এক ডিটেনশন ক্যাম্পের ভিডিও প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এপি। গণমাধ্যমটি দাবি করছে, নামে এটি ‘উরুমকি ভোকেশনাল এডুকেশন এন্ড ট্রেইনিং সেন্টার’ হলেও সেখানে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষকে বন্দি রাখা সম্ভব। উইঘুর মুসলিমদের অভিযোগ, প্রশিক্ষণের নামে খুলে বসা এসব নির্যাতন কেন্দ্রে অমানুষিক অত্যাচার করা হয়। তবে সেই প্রশিক্ষণ কেন্দের কর্তৃপক্ষ বলছে, অপরাধীদের শোধরাতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে তারা।

এপির ভিডিওতে উঠে এসেছে এর মূল ফটক থেকেই এটি একটি কারাগারের মত দেখতে। বার্তা সংস্থাটি বলছে, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ২৫ ফুট উঁচু-পুরু দেয়াল থাকে না। শুধু তাই নয় ওই দেয়ালে বিছানো আছে ইলেকট্রিক তার। এছাড়া, নজরদারির জন্যে রয়েছে ওয়াচটাওয়ারও।

এপির মতে, ২২০ একর জমির ওপর নির্মিত কেন্দ্রটি মূলত কারাগার। যেখানে ১০ হাজারের মতো মানুষকে বন্দি রাখা সম্ভব। একমাত্র স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই তাদের সংখ্যা নিরূপণ করা গেছে। সেখানকার অমানবিক নির্যাতনের কথা বহুদিন ধরে বলে আসছেন উইঘুর মুসলিমরা।

উরুমকি ভোকেশনাল ট্রেইনিং সেন্টারে বেশ কিছুদিন কাটানো দিনা নূরদিবা বলেন, সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই শিক্ষাদান করতো, খুশিই হতাম। কিন্তু, আমাদের বন্দি করা হয়েছিলো কারাগারে। অন্ধকার ঘরে থাকতাম। সেখানে, হুডওয়ালা পোশাক পড়িয়ে রাখা হতো। আর, পায়ে জড়ানো থাকতো সাড়ে ছয়শ থেকে নয়শ ফুটের শেকল। কেউই স্বেচ্ছায় এসব স্কুলে যেতো না, পরিবারকে বাধ্য করতো প্রশাসন।

অবশ্য, নিপীড়নের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে কেন্দ্রের প্রশিক্ষক এবং জিনজিয়াং প্রশাসন। তারা জানিয়েছে অপরাধী এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্তদের সঠিক পথে আনতেই এই ট্রেইনিং সেন্টার।

উরুমকি ভোকেশনাল ট্রেইনিং সেন্টারের প্রিন্সিপাল মিরা লিম জানান, ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। পরের বছরই অক্টোবরে, প্রথম ব্যাচ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে। তারা সবাই সমাজের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, নতুন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো যেসব তথ্য প্রকাশ করে বেড়াচ্ছে, সেগুলোর শতভাগই ভুয়া।

তবে এপি বলছে, ভিডিও ধারণের জন্য সাজিয়ে-গুছিয়ে কয়েদিদের শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করা হচ্ছিলো। আদতে, কেন্দ্রটির ভেতরে রয়েছে অন্ততঃ ১০টি গোপন কারাগার। যেগুলোয় প্রবেশাধিকার পাননি সাংবাদিকরা।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে, প্রথমবার এই ডিটেনশন সেন্টারের খবর প্রকাশ করে রয়টার্স ও বিবিসি। এরপরই বেরিয়ে আসে, লোমহর্ষক সব অত্যাচারের কাহিনী। জোরপূর্বক ধর্ম পরিবর্তন, গর্ভপাত থেকে শুরু করে শুকরের মাংস খেতে বাধ্য করার মতো অভিযোগও তুলেছেন উইঘুররা।

Exit mobile version