Site icon Jamuna Television

নরসিংদীতে কৃষকলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

ছবি: সংগৃহীত

ষ্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী:

নরসিংদীর শিবপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মো. হারুন মিয়া (৪০) নামের এক কৃষকলীগ নেতা ও ব্যবসায়ীকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার যোশর ইউনিয়নের কামারটেক বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত হারুন বর্তমানে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন।

মো. হারুন মিয়া যোশর ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় কামারটেক বাজারের একজন কীটনাশক ব্যবসায়ী।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মূলত কামারটেক বাজারে রাস্তার পাশে পাঁচ শতাংশ জমি নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব। ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ওই জমি হেলাল ভূঁইয়ার কাছে বিক্রি করেন সাদী ভূঁইয়া। জমি কিনতে হেলাল ভূঁইয়াকে আর্থিক সহযোগিতা করেন দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। কিন্তু ওই জমিটি ভোগদখলে ছিল সাদী ভূঁইয়ার আত্মীয় শিশু ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তির। সম্প্রতি ওই জমিতে একটি একতলা মার্কেটের নির্মানকাজ শুরু করেন হেলাল ও দেলোয়ার। এর দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয় হারুন মিয়াকে। কিন্তু এই জমিতে স্থাপনা নির্মানে স্থিতাবস্থা রাখতে আদালতের আদেশ আনেন শিশু ভূঁইয়া। সেই আদেশ দেখানোর পরও হারুন মিয়ার তত্ত্বাবধানে ওই মার্কেটের নির্মানকাজ চলছিল।

গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে সন্ধ্যার দিকে ওই মার্কেটে রাজমিস্ত্রিরা কাজ শুরু করেছিলেন। সেই সময় শিবপুর থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়। এরপরও গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে আবারও তারা কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। এতে উত্তেজিত হয়ে ওই রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশু ভূঁইয়ার লোকজন চাপাতি নিয়ে হারুন মিয়ার ওপর হামলা করে। হামলায় ১৫-২০ জন ব্যক্তি অংশ নেন। এ সময় তাঁর ডান পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথাসহ সারা শরীরে কোপানো হয়।

হারুন মিয়ার ছোট ভাই মোস্তফা মিয়া জানান, হামলার পরই তাকে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

পরে ওই রাতেই হারুনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ৫২টি সেলাই দিতে হয়েছে। পরে তাকে হাসপাতালটির আইসিইউতে রাখা হয়। আজ দুপুরে তাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত শিশু ভূঁইয়া ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ। একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর পরিবারের লোকজনও এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হননি।

শিবপুর থানার উপপরিদর্শক মো. মুরাদ হোসেন জানান, বিবদমান জমিতে মার্কেট নির্মানের জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মার্কেটটিতে নির্মাণ কাজ চলছিল। হামলার ঘটনায় শিবপুর থানায় আমরা এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version