Site icon Jamuna Television

রাজশাহী মেডিকেলে এই মাসে করোনায় মৃত্যু রেকর্ড ছাড়িয়েছে

রাজশাহী মেডিকেলে মায়ের লাশের পাশে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ছেলে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই মাসে করোনায় মৃত্যু রেকর্ড ছাড়িয়েছে। মৃতদের মধ্যে বিশ বছরের কমবয়সী রয়েছেন বেশ কয়েকজন। অন্যদিকে, গ্রামের করোনা আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুহার কিছুতেই কমছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রামের মানুষ এখনও পরিস্থিতি আঁচ করতে পারছেন না। কারণ বেশিরভাগই মারা যাচ্ছেন উপসর্গ নিয়ে। মৃতরা সরকারি হিসেবের বাইরে থাকায়, করোনাকে সেভাবে পাত্তাও দিচ্ছে না গ্রামের মানুষ।

রাজশাহী মেডিকেলের আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, জুন থেকে চলতি মাস পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে গেট পর্যন্ত নিয়ে আসতেই মারা গেছে অন্তত ৩০ জন। করোনা পরীক্ষা কিংবা চিকিৎসা না হওয়ায় তারা একেবারেই সরকারি হিসেবের বাইরে।

চিকিৎসার আগেই তানোরের কামরুন্নাহার তার সন্তানের স্নেহ, ভালোবাসা ও মমতা সব কিছু তুচ্ছ করে বিদায় নিয়েছেন ইহলোক ছেড়ে। আবার রোববার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছেই মত্যুবরণ করেন বাঘার আরেক মধ্যবয়স্ক নারী হেলেনা। এমন বহু উদাহরণ

পনের জুন থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত এই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৯৩ জন। এর মধ্যে সাড়ে চারশ জনই ৫১ থেকে ষাটোর্ধ ব্যক্তি। বেশিরভাগ পুরুষ এবং গ্রামের বাসিন্দা। অধিকাংশ মৃত্যু হয়েছে ভর্তির প্রথম দিনেই।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, হাসপাতালে আসতে গেলে দেখা যায় লকডাউন বা নানা কারণে তারা আসতে পারেন না। আবার গ্রাম থেকে যারা আসেন তাদের টাকা-পয়সা ম্যানেজ করে আসতে দেরি হয়ে যায়। ফলে, দেখা যাচ্ছে যে আমার এখানে রোগী যারা আসছে তারা একদিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে।

জুন মাসে ১১ থেকে ২০ বছর বসয়ী কেউ মারা না গেলেও গত দশ দিনে মারা গেছে ৪ জন। চলতি মাসে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী আরও বলেন, এই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এটি নতুন এবং অতি সংক্রামক। এখানে বাচ্চা থেকে বুড়ো কেউই নিরাপদ না।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, গ্রামের বেশিরভাগই নমুনা পরীক্ষায় আগ্রহী নন, নেই করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থাও। বিপরীতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি শক্তিশালী হওয়ায় হচ্ছে বিপর্যয়।

রাজশাহীর জনস্বাস্থ্যবিদ ডা.চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, এটি মোকাবেলায় এখন দুইটি অস্ত্র। এক টিকা এবং দুই মাস্ক। সুতরাং আমাদের এই দুই অস্ত্র নিয়েই এখন সব মানুষকে সচেতন করে এই মহামারি মোকাবেলা করতে হবে।

শুধু জুলাই মাসেই রাজশাহীতে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৭৪ জন। যার মধ্যে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩১২ জন। যার ৭০ শতাংশই গ্রামের মানুষ।

/এস এন

Exit mobile version