Site icon Jamuna Television

এক বছরেও স্পষ্ট হয়নি মেজর সিনহা হত্যার কারণ

মেজর সিনহা মোহম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের এক বছর আজ।

এক বছরেও প্রকাশ হয়নি অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ, স্পষ্ট হয়নি হত্যার কারণ। মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ দাশসহ ১৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে র‍্যাব।

তবে বিচার কাজ শুরু হলেও মামলার কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশের সময় এখনো আসেনি বলে মনে করেন বাদী।

গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুরের একটি চেকপোস্টে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। অভিযোগ ওঠে, টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ দাশের নির্দেশে গুলি করে সিনহা রাশেদের মৃত্যু নিশ্চিত করে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত।

এ ঘটনায় ৫ আগস্ট পরিদর্শক লিয়াকতকে প্রধান আসামি করে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বোন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর দেয়া হয়েছে অভিযোগপত্র। কয়েক দফা রিমান্ডের পর ১২ আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও ওসি প্রদীপসহ বাকীরা কোনও জবানবন্দি দেননি। চলতি বছরের ২৭ জুন মামলার বিচার কাজ শুরু হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে বন্ধ আছে সাক্ষ্যগ্রহণ।

মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার বলেন, যারা মূল আসামি তাদের যেন ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হয়। বাকি যারা আসামি আছে তাদের অপরাধ বুঝে সে অনুযায়ী শাস্তি দেবেন মাননীয় আদালত। যেদিন বিজ্ঞ আদালত এরকম একটা রায় দেবেন সেদিনই আমি ও আমার পরিবার বলতে পারবো যে আমরা সন্তুষ্ট।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পরিদর্শক লিয়াকত এ ঘটনার জন্য ওসি প্রদীপকে দায়ী করেছেন। আর ওসি প্রদীপ সব দোষ চাপিয়েছেন লিয়াকতের ওপর। আইনজীবীরা বলছেন, সঠিকভাবেই এগুচ্ছে মামলার কার্যক্রম।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, এক বছর আগে এই মামলা আদালতে রেডি ফর ট্রায়াল হয়ে গেছে, এটা কক্সবাজারের জন্য একটা নজির। একজন অ্যানগেজড অ্যাডভোকেট থাকলে সাক্ষীদের জেরা করার জন্য সময় বেশি লাগার কথা না।

ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কমিটি ওসি প্রদীপ সহ প্রায় সব আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সাক্ষ্য নেয়া হয় ৬৮ জনের। এর ভিত্তিতে ১৩ দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করে মন্ত্রণালয়ে। এ নিয়ে কথা বলতে চাননি কমিটির সদস্যরা। তবে, জানা গেছে, তদন্তকালে কেন এই হত্যাকাণ্ড? কেন গুলির ঘটনা? কোনভাবে এড়ানো যেত কিনা- এমন অন্তত ১২ টি প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর খুঁজে পায়নি কমিটি। সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়ায় তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ওখানে তদন্ত কমিটি নিশ্চয়ই কোনও সুপারিশ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এটা জনগণকে জানানো উচিত ঐ রিপোর্টে কি ছিলো।

চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে জেলা পুলিশ ও থানাগুলোতে। যে টেকনাফ থানা নিয়ে অভিযোগের পাহাড়, সেখানেও এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, কোনও টাউট-বাটপার বা দালাল শ্রেণির কোনও আশ্রয়-প্রশ্রয় এখানে নেই। সাধারণ মানুষের জন্য থানার দরজা আমরা ২৪ ঘণ্টা খোলা রেখেছি।

আদালত খোলার পরপরই এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ দেয়া হবে বলে জানান আইনজীবীরা।

/এসএইচ

Exit mobile version