Site icon Jamuna Television

মহানবীর ব্যঙ্গচিত্র ‘বাকস্বাধীনতা’, নিজের বেলায় সহ্য করতে পারছেন না ম্যাকরন!

ম্যাকরনের ব্যাঙ্গচিত্র এঁকে মামলা খেলেন কার্টুনিস্ট।

বাক স্বাধীনতা ইস্যুতে বড় ধরনের প্রশ্নের সামনে ফ্রান্সের ক্ষমতাসীন দল ‘লা রেপ্যুব্লিক অঁ মার্শ’। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরনের ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর, কার্টুনিস্টের বিরুদ্ধে মামলা করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অথচ কিছুদিন আগেই বাক স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে মহানবী (সা.) অবমাননা করা কার্টুনের সাফাই গেয়েছিলেন খোদ ম্যাকরনই।

নাগরিকদের নানা সুযোগ-সুবিধার শর্ত হিসেবে করোনা ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করা ইস্যুতে গত কয়েকদিন ধরেই বিতর্ক চলছে ফ্রান্স জুড়ে। স্বাভাবিক চলাচলের জন্য গ্রিন পাস প্রচলনের বিরোধিতায় বিক্ষোভও করছেন অনেকে। তাদের ক্ষোভের কেন্দ্রে এখন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন, ম্যাকরনের ব্যঙ্গচিত্র হাতে নিয়ে এখন অনেকেই করছেন প্রতিবাদ।

চলমান মহামারির কারণে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরনের ব্যঙ্গচিত্রকে বেছে নিয়েছেন ফরাসি কার্টুনিস্ট মিশেল অঁজলোরি। প্যারিসের অনেক জায়গায় স্বৈরশাসকের সাথে তুলনা করে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরনের নানারকম কার্টুন দিয়ে বিলবোর্ড টানিয়েছেন তিনি।

তবে রাস্তার বিক্ষোভে বাঁধা না দিলেও ব্যঙ্গচিত্রে মানহানির অভিযোগ এনে ওই কার্টুনিস্টের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরনের দল। ক্ষমতাসীন দলের এমন আচরণকে বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলছেন আলোচিত কার্টুনিস্ট লোরি।

আলোচিত কার্টুনিস্ট মিশেল অঁজলোরি বলেন, খোদ প্রেসিডেন্ট আমার মতো সাধারণ ফরাসির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এটাই প্রমাণ করে যে রাজতন্ত্রের পথে যাচ্ছে ফ্রান্স। দেখুন, আপনি পছন্দ না করলেও ক্যারিকেচার থাকবে পৃথিবীতে। আমি স্বৈরশাসকের উদাহরণ টানতেই বিশেষ কিছু চরিত্র ব্যবহার করেছি।

এই বিতর্কের সূত্রেই সামনে এসেছে বিতর্কিত শার্লি এবদো প্রসঙ্গ। ওই সাময়িকীতে মহানবী (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে মুসলিম বিশ্বে। তখন বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে কার্টুনের পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন।

কার্টুনিস্ট মিশেল অঁজলোরি আরও বলেন, একজন নবীকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের পরও আমরা সবাই মিলে শার্লি এবদোর পক্ষে স্লোগান তুলেছি। অথচ এখন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মজা করাই যেন বিশাল অপরাধ হয়ে গেছে। ফ্রান্সের মতো দেশে এটা মানা যায় না।

ফরাসি আইনজীবীদের মতে, বাকস্বাধীনতা প্রশ্নে ফ্রান্সের জন্য বড় পরীক্ষা কার্টুনিস্টের বিরুদ্ধে এই মামলা।

ফ্রান্সের আইনজীবী ও বাকস্বাধীনতা বিশেষজ্ঞ ব্যাজিল এঁদা বলেছেন, সবার আগে প্রশ্ন উঠবে কার্টুনে বাকস্বাধীনতার অপব্যবহার হয়েছে কিনা। তিনি কি রাজনৈতিক সমালোচনার মাত্রা অতিক্রম করেছেন? আমার মনে হয় কার্টুনিস্ট লোরি আদালতেও শার্লি এবদোর উদাহরণ টানবেন।

সম্প্রতি নানা কারণে প্রেসিডেন্ট ম্যাকরনের জনপ্রিয়তা কমছে ফ্রান্সে। গত মাসে দ্রোম প্রদেশে জনসংযোগের সময় এক সাধারণ নাগরিকের চড় খান তিনি। সে অপরাধে এখন ৪ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করছেন ম্যাকরনকে চড় দেয়া সেই ব্যক্তি।

Exit mobile version