Site icon Jamuna Television

ব্রহ্মপুত্রে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ নিধন, নির্বিকার প্রশাসন

এসব জালে মাছের পাশাপাশি অনেক পোনাও আটকা পড়ে। কিন্তু পোনা কোনো কাজে লাগে না বলে মৃত পোনাগুলো ফেলে দেয়া হয়।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীতে অবৈধ জাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরা চললেও প্রশাসন নির্বিকার। এতে অচিরেই নদী থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবার শঙ্কা সাধারণ মানুষের।

সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর বিভিন্ন জায়গায় দিনেরাতে লোকজন অবাধে ডারকি, খ্যাতা জাল, কারেন্ট জাল, কাডিয়া জাল, ফাঁসি জাল, কোঁচ, জুইতা, টেঁটা, বেড়া জাল, চাঁই, খরাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ডিমওয়ালা মা এবং পোনা মাছ নিধন চলছে। এসব জালে মাছের পাশাপাশি অনেক পোনাও আটকা পড়ে। কিন্তু পোনা কোনো কাজে লাগে না বলে মৃত পোনাগুলো ফেলে দেয়া হয়।

জালগুলো ভাটিতে নদীর ঢালের দিকে খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। এসব জালে ছোট-বড় মাছের সাথে একেবারে ক্ষুদ্র পোনাও ধরা পড়ে।

জেলার ১৬টি নদ-নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চল এই ধরনের জালগুলোতে সয়লাব হয়ে গেছে। অবৈধ জালের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মাছের স্বাভাবিক প্রজনন, বংশ বিস্তার ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।

অচিরেই এসব জাল বন্ধ না হলে দেশের মৎস্যভাণ্ডারে বিপর্যয় নেমে আসার শঙ্কা সাধারণ মানুষের। অবৈধ জাল দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা মা মাছ নিধন করলেও মৎস্য বিভাগসহ স্থানীয় প্রশাসনের নেই কোনো নজরদারী।

অসাধু জেলেদের কারণে ইতোমধ্যে জেলার বিখ্যাত বেশ কয়েক প্রজাতির মাছ বিলীন হয়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা নদীতে অবাধে মাছ ধরায় চলতি বছরেই দেশীয় মাছের সংকট দেখা দিয়েছে।

হাতিয়া ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের জেলে স্বদেশ চন্দ্র বলেন, সরকার ডারকি বা রিং জাল নিষিদ্ধ কিনা জানি না। এই জাল দিয়ে সব ধরনের মাছ ধরা পড়ে। এই জালে পোনাসব ছোট-বড় মাছও ধরা পড়ে। পোনা মাছ আটকা পড়ে মারা যায়, তাই সেগুলো ফেলে দেয়া হয়। জালগুলো ঢাকাতে কিনতে পাওয়া যায়। ৬টি ডারকি জাল তিনি ২৬ হাজার টাকায় কিনেছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, টাকা পাঠিয়ে দিলে ঢাকা না গিয়েও জাল কেনা যায়।

একই এলাকার জেলে শ্রী রাম চন্দ্র দাস বলেন, তিনি ৪০ বছর ধরে মাছ শিকার করছেন, কিন্তু এ বছরের মতো মাছের সংকট আগে দেখেননি।

হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় ,তবে আগামী প্রজন্ম কাগজ-কলমে মাছ দেখবে বাস্তবে নয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারিফুর রহমান সরকার বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অবৈধভাবে জাল দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। লকডাউন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন তিনি।

Exit mobile version