Site icon Jamuna Television

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ক্ষণজন্মা শেখ কামালের আজ ৭২তম জন্মদিন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের আজ ৭২তম জন্মবার্ষিকী।

বহুমুখী প্রতিভার সম্মিলন ঘটেছিলো এক তরুণের মাঝে। তিনি শেখ কামাল। বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজ সেবক, সংস্কৃতি কর্মী, ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক। দেশের প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হলেও ছিলো না কোনো অহংকার। মিশতেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে, সাধারণভাবে।

আজ ৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ শেখ কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী। আজ জন্মদিনে জানবো তার সেই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের গল্প।

পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন শেখ কামাল। বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বার বার কারাবরণ করায়, শৈশবে বাবাকে কাছে পাননি বললেই চলে। মায়ের ভালোবাসা আর শাসনে শেখ কামাল বেড়ে উঠেছেন অতি সাধারণ একজন হিসেবে।

সেগুনবাগিচার ডন্স কিন্ডারগার্টেন স্কুলে কেজি ওয়ান থেকে শেখ কামালের সহপাঠী ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুল কাউনাইন কুতুব। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বললেন, অসাধারণ হয়েও সাধারণ জীবন যাপন করতেন কামাল।

সহপাঠী সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুল কাউনাইন কুতুব জানান, আমরা জানতাম সে বাংলাদেশের অনেক বড় নেতার ছেলে। তার আচরণ ছিল অনেক সাধারণ ও অমায়িক। বন্ধুদের প্রতি তার আন্তরিকতা ছিল। তার আচরণ থেকে বোঝার উপায় ছিল না যে সে একজন রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শেখ কামালের সহপাঠী ছিলেন বীর প্রতীক মেজর জেনারেল সায়ীদ আহমেদ। জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প, একাত্তরের গল্প।

কখনো বঙ্গবন্ধুর ছেলে পরিচয় দিয়ে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেননি। না বিশ্ববিদ্যালয়ে না প্রশিক্ষণের সময়। এমনকি দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এমনটা দেখিনি।

মেজর জেনারেল সায়ীদ আহমেদ আরও জানান একাত্তরের প্রশিক্ষণের সময়কার গল্প। যেখানে ইন্দিরা গান্ধী কামালকে বলেছিল তার সাথে থেকে যেতে। লেখাপড়া চালিয়ে যেতে। কিন্তু শেখ কামাল তাতে রাজি হয়নি। প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের প্রশিক্ষণে মোট ৬১ জনের নাম ছিল। যার মধ্যে শেখ কামালের নামও ছিল। পরেরদিন ট্রেনিংয়ের সময় দেখি শেখ কামাল উপস্থিত। আমাদের সাথে ট্রেনিং নিতে চলে এসেছে। যা আমাদের মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

নেতৃত্ব ছিলো রক্তে। তাই যেখানেই গেছেন নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও সময় দিয়েছেন সংস্কৃতি অঙ্গনে। গান গাইতেন, সেতার বাজাতেন, করতেন অভিনয়।

শেখ কামাল ছিলেন একজন ক্রীড়া সংগঠক। প্রতিষ্ঠা করেছেন আবাহনী ক্লাব। সতীর্থরা বলছেন, বেঁচে থাকলে বাংলাদেশের ক্রীড়া জগৎকে তিনি নিয়ে যেতেন অনন্য উচ্চতায়।

ম হামিদ জানান, শেখ কামালকে একটি গুণ দিয়ে বিচার করা যাবে না। মঞ্চে সবার সাথে মিলেমিশে কাজ করতে হয় এই অসাধারণ শৃঙ্খলাটাও কামালের মাঝে ছিল।

তিনি আরও জানান, ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায় শেখ কামালের সাথে আমার শেষবার দেখা হয়েছিল। তখন আমরা অপরাজেয় বাংলার কাজগুলো শেষ করে গুছিয়ে দিচ্ছিলাম। কারণ, পরদিন ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু নির্মাণাধীন অপরাজেয় বাংলা পরিদর্শন করবেন। তারপর কিছুক্ষণ হইচই করে আমাকে বললেন, এতো রাতে নিশ্চয়ই আমাকে চা খাওয়াতে পারবেন না। আমি বললাম না। সেখান থেকে তিনি বাড়ি চলে গেলেন। তার মাত্র ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যেই কামাল শহীদ।

মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্ম ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট। টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম, শৈশবের কিছু সময়ও কেটেছে সেখানেই। মুক্তিযুদ্ধে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সেনাপতির এডিসি হিসেবে।

Exit mobile version